চিঠিতে বলা হয়, সম্প্রতি পুলিশের কতিপয় সদস্যের কর্মকাণ্ডে নৈতিক স্খলনের বিষয়টি ফুটে উঠেছে যা একটি শৃঙ্খলা বাহিনী হিসেবে পুলিশের ভাবমূর্তি দারুণভাবে ক্ষুণ্ন করেছে। নৈতিক স্খলনের বিষয়টি গোটা পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তাই নৈতিক স্খলনরোধে এসব দিকনির্দেশনা পালনের জন্য অনুরোধ জানানো হলো।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, পুলিশের আইন সম্পর্কে প্রত্যেক সদস্যকে প্রতিমাসে অবহিত করার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে রোলকলে, কল্যাণ সভায় বা অন্যান্য সভায় এসব আইনের গুরুত্বপূর্ণ ধারাগুলো উদ্ধৃত করে নৈতিক স্খলনের বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের সচেতন করতে হবে। ফেসবুক বা অন্য কোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাষ্ট্র, সরকার কিংবা কোনও বাহিনী, বিভাগ ও সংস্থা সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে হবে। পুলিশের কোনও সদস্য যদি নৈতিক স্খলন করে থাকেন তাহলে দেরি না করে ইউনিট প্রধানকে বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে অনুসন্ধান করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। নৈতিক স্খলনের বিষয়ে সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইউনিট প্রধানরা তা সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। কোনও সংবাদ গোপন করার বিষয় পরিলক্ষিত হলে সংশ্লিষ্ট অফিসার, ইনচার্জ ও ইউনিট প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে আহত, আঘাত, হেয় কিংবা সামাজিক বিতর্ক তৈরি করে এমন বিষয় শেয়ার বা পোস্ট করা থেকে বিরত থাকতে হবে পুলিশ সদস্যদের। এছাড়া প্রত্যেক পুলিশ সদস্য যাতে যথাযথভাবে পোশাক পরিধান করেন তা নিশ্চিত করতে হবে। কর্মক্ষেত্রে যেকোনো দুর্ব্যবহারের জন্য সংশ্লিষ্ট অফিসারের প্রতি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যেকোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও শিশু নির্যাতন বা অন্য যেকোনো স্পর্শকাতর ঘটনা শেয়ার বা পোস্ট করা থেকে বিরত থাকতে হবে। আসামিকে গ্রেফতার, পরিবহন এবং জিজ্ঞাসাবাদের সময় ফৌজদারি কার্যবিধি এবং বিধিবিধান অনুসরণ করতে হবে। পুলিশের হাতে যাতে সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার না হন সেটি নিশ্চিত ও সেবা প্রত্যাশীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে পুলিশ সদস্যদের প্রতি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
দায়িত্বরত অবস্থায় দরকার ছাড়া মোবাইলে ইন্টারনেট ব্রাউজিং, চ্যাটিং, গান ও ওয়াজ শোনা বন্ধ করতে হবে। এ রকম অবস্থায় কাউকে দেখা গেলে সংশ্লিষ্ট ডিউটি অফিসার কর্তৃক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। যেসব পুলিশ সদস্যের পরিবারের সদস্যরা কর্মস্থলে থাকেন না তারা যাতে নিয়ম অনুযায়ী ছুটিতে যেতে পারেন সে বিষয়ে গুরুত্ব এবং নজরদারি করতে হবে। পুলিশ লাইন্স, থানা ও ফাঁড়িতে পুলিশ সদস্যের জন্য বিনোদনের ব্যবস্থা করতে হবে। বিশেষ করে ফুটবল, ভলিবল, ব্যাডমিন্টন, কেরাম, দাবা, টেবিল টেনিস, ক্রিকেটসহ বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ইউনিট প্রধানদের।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলাকালীন পুলিশের কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। সেই অভিযোগগুলোর বিষয়েও পুলিশের শীর্ষ পর্যায় থেকে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।