কাউন্সিলর রাজীব রিমান্ডে

গ্রেফতারের পর তারেকুজ্জামান রাজীবমাদক ও অস্ত্র আইনে পৃথক দুই মামলায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর যুবলীগ নেতা (বহিষ্কৃত) তারেকুজ্জামান রাজীবের সাত দিন করে মোট ১৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রবিবার (২০ অক্টোবর) উভয় মামলার শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ইয়াসমিন আরা এ আদেশ দেন। আদালতে সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) লিয়াকত হোসেন এ তথ্য জানান।

রবিবার রাত সাড়ে ১১টায় ভাটারা থানার মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে উভয় মামলায় ১০ দিন করে ২০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে তাকে আদালতে হাজির করেন।

র‌্যাব সূত্র জানায়, তাকে নিয়ে তার বাসা ও কার্যালয়ে অভিযান চালানো হবে। তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংসহ আরও কিছু মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

এর আগে, শনিবার (১৯ অক্টোবর) রাতে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার চার নম্বর সড়কের ৪০৪ নম্বর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এর পরেই র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম এক তাৎক্ষণিক প্রেস ব্রিফিংয়ে জমি দখল, সন্ত্রাসবাদ, চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে রাজীবকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান।

র‌্যাব জানায়,  রাজীবকে গেফতারের সময় ওই বাসা থেকে বিদেশি মদের সাতটি বোতল, নগদ ৩৩ হাজার টাকা, একটি পাসপোর্ট, একটি অবৈধ পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিন রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।

চলমান ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের মধ্যেই সিটি করপোরেশন এলাকার কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে দখল, চাঁদাবাজি করে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। কাউন্সিলরদের কেউ কেউ সরাসরি ক্যাসিনো কারবারের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। অভিযানের পরপরই অনেকেই পালিয়ে দেশ ছেড়ে গেছেন। মোহাম্মদপুরের কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীবও গত দুই সপ্তাহ ধরে আত্মগোপনে ছিলেন। র‌্যাব সদর দফতর ও র‌্যাব ২-এর একটি যৌথ দল তাকে নজরদারি করে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, টং দোকানদার থেকে কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়া মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ, চন্দ্রিমা হাউজিং, সাত মসজিদ হাউজিং, ঢাকা উদ্যানসহ বিভিন্ন এলাকায় দখলবাজি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে রাজীবের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে প্রবাসীদের বাসাসহ এলাকার অনেকের জমি দখলের অভিযোগও রয়েছে। বর্তমানে তিনি একাধিক বাড়ি, জমি ও বিলাসবহুল গাড়ির মালিক তিনি। সাবেক একজন প্রতিমন্ত্রীর হাত ধরে রাজনীতিতে হাতেখড়ি হওয়া রাজীব ২০১৪ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কাউন্সিলর পদে জয়লাভ করেন। এরপর থেকেই মূলত ভাগ্য আরও খুলে যায় তার।

আরও পড়ুন: কাউন্সিলর রাজীবের বিরুদ্ধে দুই মামলা