ব্যাংকসহ আর্থিক খাতের অব্যবস্থাপনা তদন্তে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের নির্দেশ

সুপ্রিম কোর্টসরকারি-বেসরকারি ব্যাংকসহ আর্থিক খাতের দুর্বলতা ও অব্যবস্থাপনা তদন্তে বাংলাদেশ ব্যাংককে ৯ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংককে কাজ করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রবিবার (৩ নভেম্বর) বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে এ-সংক্রান্ত করা রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। অন্যদিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে আজমালুল হোসেন কিউসি, ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের পক্ষে শাহ মঞ্জুরুল হক এবং দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

পরে মনজিল মোরসেদ জানান, আদালত অপর এক আদেশে ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ঋণ পুনঃতফসিল করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা প্রজ্ঞাপনের সুবিধা নেওয়ার সময়সীমা আরও ৯০ দিন বৃদ্ধি করেছেন। তবে ঋণখেলাপিদের পরবর্তীতে ঋণ নেওয়া ক্ষেত্রে ২০১২ সালের জারি করা ‘মাস্টার সার্কুলার অন লোন রিশিডিউলিং’ সংক্রান্ত সার্কুলারের বিধি-নিষেধ অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।

এছাড়াও ঋণখেলাপিদের নতুন করে ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০১২ সালের ‘মাস্টার সার্কুলার অন লোন রিশিডিউলিং’ সংক্রান্ত সার্কুলার অনুসারে পুরাতন ঋণের ১৫ শতাংশ জমা, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নেওয়া এবং সিআইবিতে নাম পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

কমিটি গঠনের আদেশের বিষয়ে আইনজীবীরা জানান, বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরের বিশেষজ্ঞদের মধ্য থেকে ৯ জনকে দিয়ে একটি কমিটি গঠন করতে হবে। ওই কমিটি সরকারি-বেসরকারি সব ব্যাংকের দুর্বলতা, বিশেষ করে ঋণ পরিশোধ, ঋণ অনুমোদন এবং সংগ্রহে অনিয়মসহ সব বিষয়ে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি করবেন। এছাড়া এসব দুর্বলতা কীভাবে দূর করা যায় সে বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ওই কমিটি প্রতিবেদন দেবে। সে অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যবস্থা নেবে।

মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাউটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) এই রিট আবেদন করে। এই পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ঋণখেলাপির তালিকা দাখিলের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে আর্থিক খাতে অনিয়ম, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা বন্ধে কমিশন গঠনের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং এই কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়েও রুল জারি করেন আদালত।

গত ২৪ জুন বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণখেলাপিদের তালিকা হাইকোর্টে দাখিল করে। এদিকে রিট চলমান থাকা অবস্থায় গত ১৬ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট-সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করা হয়। সেক্ষেত্রে রিটকারীদের আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২১ মে ওই সার্কুলারের ওপর ২৪ জুন পর্যন্ত স্থিতাবস্থার আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। এরপর সংশ্লিষ্ট রুলের ওপর শুনানি শেষ করে মামলাটির রায় ঘোষণা করলেন হাইকোর্ট।