প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ পেতে বঙ্গবন্ধুর ঠিকানায় এক নারীর খোলা চিঠি

আইভি এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির পাশে রাখা তার খোলা চিঠি

 

ন্যায়বিচারের আশায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ পেতে তিন বছর ধরে ঘুরছেন এক নারী। তার নাম আইভি। গণভবনসহ সম্ভাব্য সব স্থানে দিনের পর দিন ধরনা দিয়েও প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের ব্যবস্থা না পেয়ে আইভি চিঠি লিখেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঠিকানায়। ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে সেই চিঠি রেখে এসেছেন। ভেবেছেন হয়তো কারও হাতে চিঠিটা পড়লে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছাতে পারে তার আকুতি।

পারিবারিক নির্যাতনের শিকার এই নারীর অভিযোগ, প্রতারণার শিকার হয়ে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটেছে তার। বিচ্ছেদ পরবর্তী সময়ে তার বিরুদ্ধে চারটি মামলা করেছেন তার প্রাক্তন স্বামী। চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে আইভি লিখেছেন, ‘আপনার সঙ্গে দেখা করার আকুল আবেদনটি আমি জাতির পিতার কাছেই রেখে যাচ্ছি। আমি অসহায়, তাই কেউ আমাকে সাহায্য করে না, যদি আজ জাতির পিতা বেঁচে থাকতেন তাহলে নিশ্চয়ই আমি ন্যায়বিচার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হতাম না।’

চিঠির খামে প্রাপক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

এর আগে ১ নভেম্বর ২০১৮-তে আপলোড করা ভিডিওতে দেখা আছে, ওই নারী বলেছেন, ‘মানবতার মা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার আকুল আবেদন, আমি একজন নির্যাতিত নারী। সাবেক শিল্পপতি স্বামীর অত্যাচার ও মিথ্যা মামলায় আমার জীবন আজ বিপন্ন। কালো টাকার দৌরাত্ম্যে সত্য আজ ভূলুণ্ঠিত। আমি ন্যায়বিচার চাই। আমাকে আপনার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ করে দিন।’

ভিডিওতে তিনি গণভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে একাধিকবার গিয়েও তার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাননি বলে জানান। শিল্পপতি স্বামীর মিথ্যা মামলায় জীবন অতিষ্ঠ উল্লেখ করে আইভি তার লাইভে বলেন, ‘আপনি মানবতার মা, আপনি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছেন। আর আমি তো আপনার দেশের, আপনার মেয়ের মতো।’

পুরো ভিডিওতেই অঝোরে কাঁদতে দেখা গেছে এই নারীকে।

চিঠিটি বাংলা ট্রিবিউনের হাতে আসার পর কথা হয় সেই নারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, আমি আমার ওপর ঘটে যাওয়া অন্যায়ের বিচার চাই। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে কথাগুলো বলতে পারলে আমার এই অসহনীয় জীবনের শেষ হবে বলে আমার বিশ্বাস। তিনি বলেন, ৫ বছর আগে স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটলেও তাকে চারটি মামলা টানতে হচ্ছে। মামলার খরচ চালাতে গিয়ে তিনি আজ সর্বস্বান্ত। কোনোভাবে যদি এই চিঠি প্রধানমন্ত্রীর কাছে যায় সেই আশায় তিনি বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির সামনে শ্রদ্ধা জানিয়ে এই চিঠির একটি কপি রেখে আসেন এবং এক কপি পোস্টবক্সে দেন।