আবরার হত্যা: মামলা যাবে ট্রাইব্যুনালে, বিচার হবে ১৩৫ দিনে

a66feb2fb790e8be20ad3cd1b84971f9-5d9d92b063d8eবুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলা যাবে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে। এ বিচার হবে ১৩৫ কর্মদিনে। তবে, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলাটির কার্যক্রম চালাতে হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে এই বিষয়ে চিঠি পাঠাতে হবে। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করবে। এরপরই দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এই মামলার বিচার কাজ চলতে পারবে। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক এ তথ্য জানান।

এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আইনি বাধ্যবাধকতা শেষ করে এ মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হবে। আইনে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা বিচারের জন্য প্রথম দফায় ৯০ কার্যদিবস, দ্বিতীয় দফায় ৩০ কার্যদিবস সময় দেওয়া আছে। এই ১২০ কার্যদিবসের মধ্যে বিচার কাজ শেষ করতে না পারলে তৃতীয় দফায় আরও ১৫ কার্যদিবস সময় দেওয়া হয়। সর্বমোট এই ১৩৫ কার্যদিবসের মধ্যে বিচারকাজ শেষ করতে হয়।’

দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে জানতে চাইলে একই নিয়মের কথা উল্লেখ করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘নির্ধারিত ১৩৫ কার্যদিবসের মধ্যেও যদি ট্রাইব্যুনাল সংশ্লিষ্ট মামলার কাজ শেষ করতে না পারে তাহলে সেকশন-১০ অনুযায়ী মামলাটি যে আদালত থেকে ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়েছিল, আবার সেই আদালতে ফেরত পাঠাতে হবে ট্রাইব্যুনালকে। তখন ওই আদালতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে সব মামলার আগে এ মামলাটির বিচার কাজ শেষ করতে হবে। আইনে এমন বাধ্যবাধকতাই রয়েছে।’

মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে কিনা– জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘আশা করছি পুলিশ একটি নির্ভুল চার্জশিট দিয়েছে। শিগগিরই এর বিচার কাজ শুরু হবে। মামলাটির দ্রুত বিচারের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠাতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, গত ৬ অক্টোবর রাতে আবরারকে তার কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। তারা ২০১১ নম্বর কক্ষে নিয়ে আবরারকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে রাত তিনটার দিকে শেরেবাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় গত ৭ অক্টোবর রাজধানীর চকবাজার থানায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এজাহারের বাইরে আরও ছয়জনসহ ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে। এরমধ্যে ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা সবাই কারাগারে রয়েছেন। তার মধ্যে আট জন আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। যাদের সবাই বুয়েট ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।

আবরার ফাহাদ বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন।

আরও পড়ুন- 
২৫ জনকে অভিযুক্ত করে আবরার হত্যা মামলার চার্জশিট 

আবরার হত্যা মামলার প্রতিবেদন ১৮ নভেম্বর

আবরার হত্যা: মাদক দিয়ে ‘গণপিটুনির নাটক’ সাজাতে চেয়েছিল ছাত্রলীগ 

‘ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের না চিনলে শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন চলতো’

বুয়েটে আবরার হত্যা: ছাত্রলীগ থেকে ১১ জনকে স্থায়ী বহিষ্কার

২০০৫ ও ২০১১ নম্বর রুম ছিল ছাত্রলীগের টর্চার সেল

আবরারকে পিটিয়ে হত্যার প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ

ফোনে ডেকে নেওয়ার পর লাশ মিললো বুয়েট শিক্ষার্থীর

আবরার হত্যার ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে মামলা