ঢাবি শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বাইক ছিনতাইয়ের মামলা

জগন্নাথ হল (ফাইল ছবি)বাইক ছিনতাইয়ের অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী সনেট মাহমুদ। অভিযুক্ত শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী স্বপন রায়। তিনি জগন্নাথ হলের অনাবাসিক শিক্ষার্থী। অন্যদিকে সনেট মাহমুদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির সভাপতি। রবিবার (১ ডিসেম্বর) ভোর পৌনে পাঁচটার দিকে জগন্নাথ হলের সামনে ওই ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, রবিবার রাত সাড়ে চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মোড়ে অভিযুক্ত স্বপন রায় জগন্নাথ হলে নিয়ে যেতে সনেট মাহমুদকে অনুরোধ জানান। তখন সনেট ওই শিক্ষার্থীর পরিচয় জানতে চাইলে তিনি নিজেকে বাংলা বিভাগের ছাত্র বলে পরিচয় দেন। পরিচয় জানার পর সনেট ওই শিক্ষার্থীকে বাইকে করে জগন্নাথ হলের গেইটে নিয়ে যান। পরে বাইক থেকে নামার সময় অভিযুক্ত স্বপন বাইকের চাবি নিয়ে নেয়। পরে সনেট নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বলে পরিচয় দিলে ওই শিক্ষার্থী তার আইডি কার্ড দেখাতে বলে। সনেট আইডি কার্ড দেখালে সেটিও সে নিয়ে নেয়। এরপর সনেটকে কোনও কথা বলতে না দিয়ে চড় থাপ্পর মারতে থাকেন স্বপন রায়। এতে সনেটের চোখের চশমা ও সামনের একটি দাঁত ভেঙে যায়। এরপর অভিযুক্ত শিক্ষার্থী তার হল থেকে ঘটনাস্থলে আরও তিন-চার জনকে ডেকে নিয়ে আসে। পরে সবাই তার বাইকটি নিয়ে হলে চলে যায়।

এ ঘটনার ভুক্তভোগী সনেট মাহমুদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে সোমবার বিকালে শাহবাগ থানায় মামলা করেছি।’

তবে অভিযুক্ত স্বপন রায় বাইক ছিনতাইয়ের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি আগে থেকেই সনেট ভাইকে পলিটিক্যাল নেতা হিসেবে চিনতাম। গত পরশু দিন রাত সাড়ে তিনটায় টিএসসিতে তার সঙ্গে আমার দেখা হয়। তিনি আমাকে ভ্রাম্যমাণ চায়ের দোকানে চা খাওয়ান। এরপর তার বাইকে করে গুরে বেড়ান। এক সময় তিনি আমাকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নিয়ে যান। সেখানে শিখা চিরন্তনের একটি দেয়ালের সামনে কুপ্রস্তাব দেন। তখন তার সঙ্গে আমার ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে ওনাকে আমি বলি ‘ভাই আমার কাল পরীক্ষা আছে’ এ কথা বলে তার বাইকে করে আমি হল গেটে আসি। ঘটনার পর আমার মেজাজ খুব খারাপ হয়ে যায়। তাই হল গেটে বাইক থেকে নামার পরে ওনাকে আমি মারধর করি। এসময় তিনি বাইক রেখে পালিয়ে যান। পরে বিষয়টি আমি হলের বড় ভাইদের জানাই।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন ছাত্রলীগ নেতা লিটন বাড়ৈ ও হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী। তারা আমাকে বাইকটি হলের নতুন ভবনের সামনের মাঠে রেখে আসতে বলেন। আমি বাইকটি সেখানে রেখে আসি। হলের সিসিটিভি ফুটেজ দেখলে বিষয়টি স্পষ্ট বোঝা যাবে। ছিনতাইয়ের ইচ্ছা থাকলে আমি হল সংসদকে বিষয়টি জানাতাম না।

লিটন বাড়ৈ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঘটনাস্থলে গেলে গেটের দারোয়ান আমাকে একটি আইডি কার্ড দেখায়। সেটি দেখে আমি সনেটকে চিনতে পারি। পরে ছোট ভাইদের বলেছি, বাইকটি হলের ভেতরে এনে রাখতে। পরে তারা বাইকটি নতুন ভবনের খোলা মাঠে এনে রাখে।’ বাইকের চাবি ছিল না বলেও তিনি জানান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ভুক্তভোগী এবং থানা থেকে মামলার বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। যেহেতু ঘটনাটি নিয়ে থানায় মামলা হয়েছে, সেহেতু এটি থানা কর্তৃপক্ষ দেখবে। অভিযোগের সত্যতা যাচাই করবে তারা।’

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, বাইক ছিনতাইয়ের অভিযোগে মামলা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।