নীতিমালা হচ্ছে ড্রোন ওড়ানোর, দ্রুত মিলবে অনুমতি

আবেদনের ভিত্তিতে ড্রোন ওড়ানোর অনুমতি দেয় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক। তবে এজন্য ৪৫ দিন আগে আবেদন করতে হয়। তবে সম্প্রতি ড্রোন নিয়ে নীতিমালা তৈরি ও তা ওড়ানোর অনুমোদেনের প্রক্রিয়া দ্রুত করতে অটোমেশন করার উদ্যোগ নিয়েছে বেবিচক।

বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এক মতবিনিময় এসব তথ্য জানান বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো.মফিদুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘ড্রোন- এটা একটা বিগ চ্যালেঞ্জ। শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বে ড্রোনকে কীভাবে একটা পদ্ধতির মধ্যে আনা যায় সেই প্রক্রিয়া চলছে। ড্রোনের ব্যবহার থাকবেই, বাংলাদেশেও আছে। কোনও এলাকার সার্ভে করতে, পর্যটনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ড্রোন দিয়ে ছবি, ভিডিও ধারণ হচ্ছে।  কিন্তু সেটার নিয়ম নীতি আছে, ড্রোন অপারেশন আন্ডার-কন্ট্রোল হতে হবে।  ড্রোন নীতিমালা তৈরি করা হচ্ছে। যেসব সংস্থা ড্রোন ওড়ানোর অনুমতি চাচ্ছে, আমরা অনুমতি দিচ্ছি। কিন্তু  ড্রোন ওড়াতে বিভিন্ন সংস্থার সম্মতির ভিত্তিতে অনুমতি দেওয়া হয়। আমরা এ প্রক্রিয়াকে সহজ করার জন্য অটোমেশন চালু করার উদ্যোগ নিচ্ছি। অনলাইনে যে কেউ অনুমতির আবেদন করতে পারবেন।’

বেবিচকের সদস্য (ফ্লাইট স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড রেগুলোশন) গ্রুপ ক্যাপ্টেন চৌধুরী মো. জিয়াউল কবীর বলেন, ‘বর্তমানে ড্রোন ওড়ানোর আবেদন পাওয়া গেলে বেবিচক যাচাই বাছাই শেষে আরও কয়েকটি সংস্থার কাছে পাঠায়। তাদের অনুমোদন পাওয়া গেলে অনুমতি দেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়াটি বেশ সময় সাপেক্ষ। এজন্য অটোমেশন করা হচ্ছে। এর ফলে কেউ আবেদন করলে সেটি এক সঙ্গে সব সংস্থার কাছে যাবে, সবার ছাড়পত্র পেলে অনুমতি দেবে বেবিচক। পুরো প্রক্রিয়াটি অনলাইনে হওয়ায় কম সময় লাগবে। ’

জানা গেছে,  বর্তমানে  ড্রোন ওড়াতে  নির্ধারিত ফরমে আবেদন করলে সেটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যাচাই বাছাই করে অনুমতি দেয় বেবিচক। পাঁচ পৃষ্ঠার এই আবেদন পত্রে ড্রোন কোথায় ওড়ানো হবে, কে ওড়াবে, ড্রোনের আকার, সেফটি বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য দিতে হয় আবেদনকারীকে। বর্তমানে মাসে শতাধিক আবেদন জমা পড়ে সিভিল অ্যাভিয়েশনে।’

ড্রোন ওড়ানোর শর্ত ও যোগ্যতার ব্যাপারে জানা গেছে, আঠারো বছরের কম বয়সী কেউ ড্রোন উড্ডয়নের অনুমতি পাবেন না। মদ্যপানের ৮ ঘণ্টার মধ্যে কেউ ড্রোন ওড়াতে পারবেন না।  ড্রোনটি কোনও ক্ষতিসাধন করলে সেটির দায় ড্রোনের মালিককে বহন করতে হবে। ড্রোন যে স্থানে ওড়ানো হবে, সে স্থানের ফায়ার সার্ভিস  ও পুলিশকে অবহিত করতে হবে। ভূমি থেকে ২০০ ফিটের বেশি উচ্চতায় ড্রোন ওড়ানো যাবে না। যে কোনও বিমানবন্দরের ১০ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে ড্রোন ওড়াতে হলে সংশ্লিষ্ট বিমানবন্দরের অ্যারোড্রম অপারেটরের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। একজন ব্যক্তি এক সঙ্গে একাধিক ড্রোন ওড়াতে পারবেন না।’

প্রসঙ্গত, দেশে ড্রোন ওড়ানোর অনুমতি মিললেও ড্রোন আমদানি নিষিদ্ধ। ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)ড্রোন আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।