রেলের অবৈধ ক্রসিং বন্ধের অগ্রগতি জানাতে হাইকোর্টের নির্দেশ

সুপ্রিম কোর্টরেল লাইনের অবৈধ লেভেল ক্রসিং ও বৈধ ক্রসিং চিহ্নিতের বিষয়ে অগ্রগতি জানাতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের তিন মাস সময় বেঁধে দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা অবৈধ ক্রসিং বন্ধ, বৈধ ক্রসিং চিহ্নিত করতে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। চার সপ্তাহের মধ্যে রিটের বিবাদীদের এই রুলের জবাব দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট একলাছ উদ্দিন ভূইয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।

এর আগে ২৪ নভেম্বর দেশের রেল ক্রসিংগুলোয় প্রয়োজনীয় সংখ্যক গেটম্যান নিয়োগ এবং রেললাইনের অবৈধ গেট বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা শাহিন আরা লাইলী বাদী হয়ে এ রিট দায়ের করেন।

রিটে মন্ত্রী পরিষদের সচিব, সড়ক ও জনপদ মন্ত্রণালয় সচিব, রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) বিবাদী করা হয়।

রিট আবেদনে বলা হয়, বর্তমানে বাংলাদেশে রেল বিভাগে ১ হাজার ৪১২টি লেভেল ক্রসিং রয়েছে। বুয়েটের দুর্ঘটনাবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান-এআরআই ’র তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে ২৩৫টি দুর্ঘটনায় ২৪৪ জন মানুষ মারা যায় এবং ২২৮ জন গুরুতর আহত হয়। ২০১৭ সালে ২১১টি দুর্ঘটনায় ২২৯ জন মারা যায় এবং ১৫৫ জন আহত হয়। ২০১৬ সালে ১০ মাসে ৫৬টি দুর্ঘটনায় ৫৯ জন মারা যায় এবং ৪৬ জন আহত হয়। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ১৫ জুলাই সিরাজগঞ্জ উল্লাপাড়ায় বর-কনেসহ ১০ জন মারা যায় এবং ৫ জন গুরুতর আহত হয়।

বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রকাশিত আগস্ট ২০১৮ এর ডাটাবেজ অনুযায়ী, ১ হাজার ২৪২টির মধ্যে ৪৬৬টি লেভেল ক্রসিংয়ের গেটম্যান আছে এবং ৪৯৬টি লেভেল ক্রসিং অরক্ষিত অবস্থায় আছে। এর মধ্যে রেলওয়ে ইস্ট জোনে ৪৩৪টি ক্রসিংয়ের মধ্যে ২৫৫টিতে গেটম্যান রয়েছে। বাকিগুলো অরক্ষিত অবস্থায় আছে। কিন্তু, বাংলাদেশ রেলওয়ে আইন ১৮৯০ এর ১৩, ১৪ ও ১২৮ ধারায় রেলওয়ে নিরাপত্তা এবং ফেঞ্চের ব্যবস্থা গ্রহণের উল্লেখ আছে। প্রতিদিন বহু লোক নিহত ও আহত হওয়ার ফলে সুখময় রেলযাত্রা ব্যাহত ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পতিত হচ্ছে। সরকারের রেলওয়ে ডিভিশন এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদফতরসহ ৯টি ডিপার্টমেন্টের বৈধ ও অবৈধ লেভেল ক্রসিং সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। কিন্তু, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এত দুর্ঘটনার পরও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।