পিলখানা হত্যা মামলার রায়ে কোরআন থেকে যে উদ্ধৃতি দিলেন বিচারপতি

রায়ের কপিবহুল আলোচিত পিলখানা হত্যা মামলার রায়ে কোরআন শরীফের সূরা নিসার ৯৩ নম্বর এবং সূরা মায়েদার ৪৫ নম্বর আয়াতের উদ্ধৃতি তুলে ধরে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বুধবার (৮ জানুয়ারি) পিলখানা হত্যা মামলায় ২৯ হাজার ৫৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় (ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিলের ওপর) প্রকাশিত হয়। বিচারপতি মো. শওকত হোসেন, বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের স্বাক্ষরের পর এ রায় প্রকাশ করা হয়।
বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী তার পর্যবেক্ষণে বলেন, কোরআনে সূরা নিসার ৯৩ নম্বর আয়াতে বর্ণিত হয়েছে,‘যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় কোনও ইমানদারকে হত্যা করবে, তার শাস্তি জাহান্নাম। সে চিরকাল সেখানেই থাকবে। আল্লাহ তার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়েছেন, তাকে অভিসম্পাত করেছেন এবং তার জন্য কঠোর শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন। হাদিসে এসেছে, ওহুদের যুদ্ধ চলাকালে একজন মুসলমান অপর এক মুসলমানকে ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে হত্যা করে। মহানবী করিম (সা.) ওহির মাধ্যমে এ সম্পর্কে অবহিত হন এবং যুদ্ধ থেকে ফেরার পথে হত্যাকারীকে কিসাস করার অর্থাৎ অনুরূপ শাস্তি দেওয়ার নির্দেশ দেন এবং তার ক্ষমা প্রার্থনাও তিনি প্রত্যাখ্যান করেন।’
কোরআনে সূরা বাকারার ১৭৯ আয়াতে বর্ণিত হয়েছে,‘হে বুদ্ধিমানগণ কিসাসের মধ্যে তোমাদের জন্য জীবন রয়েছে যাতে তোমরা সাবধান হতে পারো।’এছাড়া রায়টির পর্যবেক্ষণ অংশে সূরা মায়েদার ৪৫ নম্বর আয়াত এবং প্রখ্যাত কয়েকজন মনীষী ও অপরাধ বিজ্ঞানীর উদ্ধৃতি তুলে ধরা হয়।’
রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ‘পিলখানায় দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া দেশের প্রচলিত আইনই নির্দেশ করে। কারণ তাদের অবহেলা, অমনোযোগিতা, কর্তব্য পালনে ব্যর্থতা এবং অযোগ্যতার কারণে এ দেশের সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত অর্থে গড়ে ওঠা ৫৭ জন নিরস্ত্র সামরিক কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন মানুষকে নির্মমভাবে জীবন দিতে হয়েছে যা কোনও অবস্থায় কাঙ্খিত নয়।’