শিশু পাচার মামলায় সাবেক ডিআইজি’র স্ত্রীর জামিন স্থগিত

সুপ্রিম কোর্টশিশুপাচার মামলায় পুলিশের সাবেক ডিআইজি আনিসুর রহমানের স্ত্রী আনোয়ারা রহমানকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। অন্যদিকে আনোয়ারা রহমানের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মনিরুজ্জামান আসাদ।

এর আগে অভিযুক্তরা দাবি করেন, তাদের মোট ১৪টি সন্তান রয়েছে। অথচ এসব শিশুদের মধ্যে সাতজনের বয়স প্রায় একই। ২০০৬ সালের ২ জুন বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর বিভিন্ন বিতর্ক তৈরি হয়। তবে ঘটনা প্রকাশ পেলে সাবেক ডিআইজি আনিস ১৪ জনকেই তাদের সন্তান দাবি করেন। জন্মনিবন্ধন সনদের তথ্য অনুযায়ী, ওই শিশুদের মধ্যে তিন জনের জন্ম আট মাস সময়ের মধ্যে।

আসামিরা সাত শিশুকে জমজ বলে দাবি করেন। কিন্তু পরবর্তীতে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে আদালত রায় দেন, সন্তানগুলো যমজ নয় এবং একই মায়েরও সন্তান নয়।

এরপর ২০০৬ সালের ২ জুন হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন অ্যাডভোকেট এলিনা খান রাজধানীর বাড্ডা থানায় একটি জিডি করেন। পরবর্তীতে শিশুগুলোকে পাচারের উদ্দেশ্যে এনে জড়ো করা হয়েছিল এমন অভিযোগ এনে তিনি আদালতে মামলা দায়ের করেন। 

২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল শিশুপাচার মামলায় পুলিশের সাবেক ডিআইজি আনিসুর রহমান ও তার স্ত্রী আনোয়ারা রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন ঢাকার চার নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আরিফুর রহমান। রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের অতিরিক্ত প্রত্যেককে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন আদালত।

পরে আনিসুর রহমান জামিনে গিয়ে পলাতক হন। তবে মামলার অপর আসামি তার স্ত্রী আনোয়ারা রহমান আদালতে হাজির থাকায় তাকে কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠান। পরে আনোয়ারা রহমান খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল দায়ের করেন। ওই আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় গত ১৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট তার জামিন মঞ্জুর করে। ওই জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে।