দিলু রোডে আগুন

ইলেকট্রিক বোর্ড থেকে আগুনের সূত্রপাত: তদন্ত কমিটি

দিলু রোডের আগুন লাগা বাড়িরাজধানীর ইস্কাটনে দিলু রোডের অগ্নিকাণ্ড সংঘটিত বাড়িটির গ্যারেজে ইলেকট্রিক বোর্ডের পাশে রাখা ছিল পুরনো আবসাবপত্র। এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক আবুল হোসেন জানান, ইলেকট্রিক বোর্ড থেকে পুরনো আসবাবপত্রে আগুন লাগে। আর সেখান থেকে গ্যারেজে রাখা পেট্রোলচালিত প্রাইভেট কারে আগুন ধরে যায়। গাড়ির পেট্রোল থেকে আগুন দ্রুত অন্যান্য ফ্লোরে ছড়িয়ে পড়ে।

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ভোর সাড়ে ৪টায় লাগা এই আগুনে শিশুসহ তিনজন মারা গেছেন। তারা হলেন– একেএম রুশদী (৫), আবদুল কাদের লিটন (৪৫) ও আফরিন জান্নাত জ্যোতি (১৭)। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে (ঢামেক) ময়নাতদন্ত শেষে তাদের মরদেহ স্বজনদের কাছে বৃহস্পতিবার বিকালে হস্তান্তর করা হয়েছে।

আগুনে পুড়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রুশদীর বাবা শহীদুল ইসলামের (৪০) শরীরের ৪৩ শতাংশ পুড়ে গেছে। আর মা জান্নাতুল ফেরদৌসের (৩৫) ৯৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। দুজনই ঢামেকের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।  এ আগুনে সৃষ্ট ধোয়ার কারণে ও আতঙ্কিত হয়ে ছাদ থেকে নামতে গিয়ে আহত হয়েছেন আরও অন্তত দশ জন।

গ্যারেজে পুড়ে যাওয়া গাড়িআগুনে ক্ষয়ক্ষতি ও কারণ খুঁজে বের করার জন্য পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস। তদন্ত কমিটির প্রধান, ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক আবুল হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের দেশে অনেকেই আইন-কানুন কেউ মানে না। পাঁচতলা ভবনটিতে গার্মেন্টস বায়িং হাউজ, স্টোর, উপরে সব আবাসিক ফ্লাট, নিচে গ্যারেজ, গ্যারেজের পাশে পুরোনো মালামাল রাখা ছিল।’

জরুরি প্রয়োজনে আগুন নির্বাপণের জন্য কোনও ব্যবস্থাপনা বাড়িটিতে ছিল না বলে জানিয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। বাড়িতে কী কী ক্রটি ছিল তা নির্ধারণ করে আগামী সপ্তাহেই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে বলে জানান আবুল হোসেন।  

আগুনে তিনজন নিহতের ঘটনায় কোনও মামলা হয়নি বলে জানিয়েছেন হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রশিদ। থানা সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন জন এই বাড়িতে ফ্ল্যাট কিনেছেন। প্রকৃত মালিককে এখনও পাওয়া যায়নি।

লাইফ সাপোর্টে শহিদুল-জান্নাতুল দম্পতি

ভবনে তৃতীয় তলায় থাকতেন শহিদুল ইসলাম ও জান্নাতুল ফেরদৌস। আগুনে পুড়ে মারা গেছে তাদের পাঁচ বছরের সন্তান একেএম রুশদী। তারা দুজনের অবস্থাও সংকটাপন্ন। দুজনকেই শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।

শুক্রবার বিকালে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আবুল কালাম বলেন, ‘তাদের দুজনেরই শ্বাসনালি পুড়ে গেছে। শহিদুলের বার্ন একটু কম হলেও তার শ্বাসনালি পুড়ে যাওয়ায় তিনি শ্বাস নিতে পারছিলেন না। তাই তাকেও লাইফ সাপোর্টে রেখেছি। এখন দু-একটি দিন না গেলে কিছুই বলা যাচ্ছে না। আমাদের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি।’