করোনা নিয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেফতার নাঈম একদিনের রিমান্ডে

রিমান্ড

করোনা নিয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেফতার যুবক নাঈমুর রহমান নাঈমের একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। বুধবার (১ এপ্রিল) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহিনুর রহমান তার রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার জিআর শাখার সংশ্লিষ্ট সূত্র বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সূত্র জানায়, কদমতলী থানার মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক কাছেদ মুন্সী আসামি নাঈমকে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। অপরদিকে নাঈমের পক্ষের আইনজীবী বশির উদ্দিন তার রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ রিমান্ডের জোর দাবি জানান। উভয়পক্ষের শুনানি  শেষে আদালত জামিনের আবেদন বাতিল করে তাকে একদিনের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন। 

এর আগে করোনা নিয়ে গুজব ছড়ানোর অপরাধে মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) মধ্যরাতে সিআইডির সাইবার মনিটরিং টিমের সদস্যরা রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে নাঈম নামে ওই যুবককে গ্রেফতার করে। একই অভিযোগে আরও কয়েকজনকে নজরদারি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সিআইডি সাইবার মনিটরিং টিমের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খায়রুল আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গত ২৯ মার্চ সিআইডির সাইবার মনিটরিং টিম একটি বিভ্রান্তিকর পোস্ট শনাক্ত করে। জনৈক তথ্যদাতা আমাদের পেজে নক করে একটি ফেসবুক লিংক শেয়ার করেন। সেই লিংকে গেলে নিম্নোক্ত পোস্ট পাওয়া যায়, যা প্রচুর পরিমাণে লাইক ও শেয়ারের মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

সেখানে বলা হয়, ‘এইমাত্র জানা গেলো আমাদের শনির আখড়ায় ও সাইনবোর্ড এলাকায় ২৭ জন মারা গেছে করোনাভাইরাসে। আপনারা সবাই সতর্ক হন, নিজে জানুন অন্যকে জানাতে সাহায্য করুন। শেয়ার করে তথ্যটি সবার কাছে পৌঁছে দিন। আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন।’

খায়রুল আলম  বলেন, ‘এ তথ্য পাবার পরেই তদন্তে নামে সাইবার পুলিশের একটি বিশেষ টিম। প্রযুক্তিগত সহায়তায় আমাদের টিম সেই পোস্টদাতা মো. নাঈমুর রহমান নাঈমকে (১৯) মঙ্গলবার দিবাগত রাতে যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে গ্রেফতারে সক্ষম হয়।’

তিনি জানান, নাঈমকে জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, সে ওই আইডিটি হ্যাক করেছে। আইডির আসল মালিক তার এক সময়ের বন্ধু ছিল। পরবর্তী সময়ে তাদের ভেতরে বাদানুবাদের একপর্যায়ে সে নাঈমকে মারধর করে। এরপর থেকেই নাঈম প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ খুঁজতে থাকে। গত ২৩ মার্চ নাঈম ওই আইডি হ্যাক করতে সক্ষম হয় ও ২৯ মার্চ সে বর্তমান পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে এই পোস্ট দেয়। নাঈম সেখানেই থেমে থাকেনি। সে অন্য একটি ফেক আইডি তৈরি করে এবং সেই আইডি ব্যবহার করে সাইবার পুলিশের পেজে এই পোস্ট সম্পর্কে তথ্য প্রদান করে, যাতে করে আইডির আসল  মালিক গ্রেফতার হয়ে যায়।

হ্যাকার মো. নাঈমুর রহমান ওরফে নাঈমের মোবাইলসহ বিভিন্ন ডিভাইস জব্দ করেছে সাইবার পুলিশ সেন্টার। সে একজন কন্ট্রাক্ট হ্যাকার। টাকার বিনিময়ে এর আগেও সে ফেসবুক হ্যাকিংয়ের কাজ করেছে। তার ডিভাইস থেকে ইতোমধ্যে তার অপরাধের বিভিন্ন তথ্য পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে কদমতলী থানায় মামলা করা হয়েছে।