করোনাকালে স্লোভেনিয়ায় ঈদ আনন্দ ফিকে

স্লোভেনিয়ার মসজিদঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ। কিন্তু এ বছর উৎসবের অনুভূতি অন্যান্যবারের তুলনায় ভিন্ন। করোনাভাইরাস মহামারিতে বিভিন্ন দেশের মতো স্লোভেনিয়ায় নেই ঈদের রঙ। কোভিড-১৯ সংকট অনেকটা ফিকে করে দিয়েছে সব। 

৭ হাজার ৮২৭ দশমিক ৪ বর্গমাইলের স্লোভেনিয়ায় সব মিলিয়ে ২১ লাখ মানুষের বসবাস। ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় এখানে অভিবাসী খুবই কম। প্রবাসীদের বেশিরভাগই বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, সার্বিয়া, মেসিডোনিয়া ও ক্রোয়েশিয়ার নাগরিক। সব মিলিয়ে তাদের সংখ্যা ২৫ থেকে ৩০ জনের মতো। তবে স্লোভেনিয়ায় বাংলাদেশিদের কোনও সুসংগঠিত কমিউনিটি না থাকায় বিশেষ দিবসে একে অন্যের সঙ্গে উদযাপনের সুযোগ হয় না। ঈদ তাই বলতে গেলে অনেকটা একা কেটে যায় সবার।

স্লোভেনিয়ায় কোনও মসজিদ না থাকায় ঈদের নামাজ সেভাবে হতো না। এ বছরের শুরুতে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশটির প্রথম মসজিদের উদ্বোধন হয়েছে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে ঈদ জামাত কতোটটা প্রাণবন্ত থাকবে তা নিয়ে আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। স্লোভেনিয়া সরকার জনসমাগমের ওপর নিষেধাজ্ঞা এখনও পুরোপুরি তুলে নেয়নি।
ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে নিজেদের করোনাভাইরাস মুক্ত ঘোষণা করেছে স্লোভেনিয়া। সংক্রমণের হার এবং একইসঙ্গে মৃত্যুর হার বিবেচনায় ইউরোপের অন্য যেকোনও দেশ থেকে স্লোভেনিয়া এখন সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে। তবুও সবাইকে যথাসম্ভব সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।

করোনা পরিস্থিতির কারণে গত মার্চ থেকে স্লোভেনিয়ায় ইউনিভার্সিটি বন্ধ। অনলাইনে শিক্ষা-কার্যক্রম পরিচালিত হলেও তা মানসম্পন্ন ঠেকছে না। ইউনিভার্সিটি অব নোভা গোরিছার কাছেই ইতালির সীমান্ত। বিশ্ববিদ্যালয়টির মূল ক্যাম্পাস থেকে ইতালির গোরিজিয়ার বর্ডার মাত্র কয়েক মিনিটের হাঁটাপথ। ইতালির প্রায় সব শহরেই বাংলাদেশিদের বসবাস। করোনাভাইরাস ছড়িয়ে না পড়লে ঈদের সময়টাতে হয়তো বা ইতালি কিংবা অস্ট্রিয়ায় চলে যেতেন প্রবাসীদের অনেকে। কিন্তু সীমান্ত সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় এবার তা সম্ভব হচ্ছে না।

স্লোভেনিয়ার মতো ইউরোপের অনেক দেশে ঈদের দিনে সরকারি ছুটি নেই। এ কারণে শিক্ষার্থীদের অংশ নিতে হবে অনলাইন ক্লাসে। এমনিতেই সাদামাটাভাবেই উদযাপিত হয় এখানকার ঈদ। করোনা যেন মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে এসেছে!

তবুও ভাইরাসটিকে একটি বিশেষ কারণে ধন্যবাদ জানাতে হয়! এ পরিস্থিতির আবির্ভাব না হলে হয়তো কখনও আশেপাশের অসহায় মানুষের পাশে কেউ দাঁড়াতো না। তাই এবারের ঈদের মূলমন্ত্র হোক মানবসেবা। ঈদুল ফিতর সবার জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল শান্তি ও আনন্দ।