গেন্ডারিয়ায় নজরকাড়া সাঈদ খোকন পার্ক

পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ায় ডিস্টিলারি রোডের গিঞ্জি এলাকায় একখণ্ড উন্মুক্ত জায়গা। চারদিকে বিভিন্ন প্রজাতির ফুল গাছ। বাগানের ভেতর বসার বেঞ্চ। নিরিবিলি হাঁটার ইচ্ছে থাকলে আছে পরিপাটি ওয়াকওয়ে। রাতে থাকে বাহারি আলো। মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন পার্কে স্থানীয়রা পাচ্ছেন এমন মনোরম পরিবেশ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই শুয়েবসে সময় কাটান এখানে। কেউবা হিমেল হাওয়ায় ঘুমিয়ে পড়েন। বেঞ্চে বসে মনের আনন্দে গাইছিলেন বয়োবৃদ্ধ জসিম উদ্দিন হাওলাদার। তিনি রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। তার কাছে জানতে চাইলে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই এলাকায় এমন উন্মুক্ত স্থান আর কোথাও নেই। ক্লান্ত হয়ে গেলে এখানে এসে বসলে প্রশান্তি লাগে। গান গাইতে ইচ্ছে করে। তাই মাঝে মধ্যে একটু একটু গাই।’

গেন্ডারিয়ায় সাঈদ খোকন পার্কহাঁটাহাঁটি আর গাছের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা এদিক-ওদিক তাকালেই চোখে পড়ে। তাদের মধ্যে সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলো। তিনি বলেন, ‘ডায়াবেটিসের কারণে ডাক্তার প্রতিদিন কমপক্ষে ৪০ মিনিট করে হাঁটতে বলেছেন। কিন্তু করোনার দিনে রাস্তাঘাটে হাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ। তাই বাসা থেকে বেরিয়ে পার্কে চলে আসি। এলাকাটি ছোট হলেও পরিবেশ সুন্দর। স্থপতিরা দারুণভাবে পার্কটি সাজিয়েছেন। এলাকার মানুষ এর রক্ষণাবেক্ষণ করছে।’

গেন্ডারিয়ায় সাঈদ খোকন পার্কপ্রায় ১২ শতাংশ আয়তনের এই জায়গায় আছে একটি কফি শপ, পানি নিষ্কাশনের ড্রেন ও দুটি গণশৌচাগার। ফলে স্বস্তি প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের অগ্রাধিকার ‘জলসবুজে ঢাকা’ প্রকল্পের আওতায় পার্কটিতে এসেছে নতুন আমেজ।

দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মো. এমদাদুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জলসবুজে ঢাকা প্রকল্পের আওতায় বিশিষ্ট স্থপতিদের সমন্বয়ে পার্ক ও মাঠের নকশা প্রণয়ন করা হয়েছে। ফলে সবই মানসম্পন্ন লাগবে সবার কাছে।’

গেন্ডারিয়ায় সাঈদ খোকন পার্ক১ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই পার্ক গত বছরের ২৩ নভেম্বর উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। উদ্বোধনের পর থেকেই এই জায়গা যেন লোকারণ্য। করোনাকালেও পার্কটিতে মানুষের পদচারণা দেখা গেছে। এমন একটি উন্মুক্ত স্থান এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ছিল।

গেন্ডারিয়ায় সাঈদ খোকন পার্কসাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নগরবাসীর মৌলিক চাহিদার মধ্যে চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা অন্যতম। কিন্তু পুরান ঢাকায় সেই সুযোগ ছিল অনেক কম। এর মধ্যেও সিটি করপোরেশনের জায়গায় বেশকিছু পার্ক ও মাঠ সাজানো হয়েছে। পৃথিবীর অনেক দেশে এমন পার্ক নেই। আশা করি, নতুন প্রশাসন এগুলোর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ করবে।’

মোহাম্মদ সাঈদ খোকন সেন্টারনজরকাড়া পার্ক সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন সেন্টার। ভবনটিতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হলরুম, কার পার্কিং, গেস্ট রুম, বৈদ্যুতিক সাব স্টেশন, জেনারেটরসহ নানান সুবিধা পাওয়া যাবে।

ছবি: প্রতিবেদক