পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি, মিডিয়া) মো. সোহেল রানা জানান, ছয় কিশোর যে পথে সুন্দরবনে প্রবেশ করেছে সেই পথ খুঁজে না পেয়ে উল্টো বনের গভীরে চলে যায়। তাদের সঙ্গে তিনটি মোবাইল ফোন ছিল। একপর্যায়ে মোবাইল ফোনে পরিবারকে নিজেদের দুর্দশার কথা জানায় কিশোররা। হারিয়ে যাওয়াদের দলের একজন বুদ্ধি করে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে। ৯৯৯ সঙ্গে সঙ্গে শরনখোলা থানার সঙ্গে তাকে যোগাযোগ করিয়ে দেয়। এদিকে নৌ-পুলিশকেও বিষয়টি অবহিত করা হয়। নিজেদের সমস্যার কথা জানিয়ে কিশোররা তাদের উদ্ধারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে অনুরোধ করে।
উদ্ধার অভিযানে অংশ নেওয়া পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, উদ্ধার অভিযান শুরু করার পরপরই শুরু হয় বৃষ্টি। এতে বনের মধ্যে এক গুমোট অন্ধকারের সৃষ্টি হয়। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা চালিয়ে যায় পুলিশ। তাদের সঙ্গে পুনরায় যোগাযোগ করলে তারা জানায়, মাইকে এশার আজানের শব্দ শুনেছে। কিন্তু সুন্দরবনের ওই এলাকার পাশের লোকালয়ে দুই পাশে দুটি মসজিদ আছে। পুলিশ একপাশের মসজিদের মাইক দিয়ে তাদের ডাকে। এরপর মোবাইল ফোনে জানতে চাওয়া হয়, আওয়াজ শোনা যায় কিনা? জবাব আসে, খুবই কম। এবার বনের অন্য পাশের মসজিদের মাইক দিয়ে ডাকা হয়। সে সময় মোবাইল ফোনে কিশোরেরা জানায়, তুলনামূলক স্পষ্ট শব্দ শুনতে পাচ্ছিল তারা। এর মাধ্যমে বনের মধ্যে তাদের অবস্থান কিছুটা আঁচ করে পুলিশ ভেতরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে এগুতে থাকে।
পুলিশ জানায়, কিশোরদের খুঁজে পেতে রাত ৩টা বেজে যায়। দীর্ঘক্ষণ বনের মধ্যে প্রতিকূল পরিবেশে থেকে মুষড়ে পড়েছিল তারা। পরে তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে শুশ্রূষা করা হয়। এরপর আইনি প্রক্রিয়া শেষে প্রত্যেকের পরিবারের সদস্যদের কাছে তাদের হস্তান্তর করা হয়।
বাগেরহাটের শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসকে আব্দুল্লাহ আল সাঈদ বলেন, ‘নৌকা পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আমরা ছয় কিশোরকে উদ্ধার করি। ওরা প্রায় ১৮ ঘণ্টা বনের মধ্যে অবরুদ্ধ অবস্থায় ছিল। তারা সুন্দরবন লাগোয়া একটি গ্রামের বাসিন্দা।’ তাদের প্রত্যেককে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান তিনি।