লকডাউনের ১৪তম দিন ছিল ‘অনুরোধের’

পূর্ব রাজাবাজার প্রবেশের মুখে পুলিশী প্রহরা রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজার এলাকার লকডাউনের আজ ১৪ তম দিন। এদিনের সকাল থেকেই এলাকার বাইরে যাওয়ার এবং ভেতরে প্রবেশ করার চেষ্টা ছিল অনেকের। আবার এলাকায় প্রবেশের জন্য অনেকেই এসেছেন ঢাকার বাইরে থেকে। কিন্তু কোনও শিথিলতা দেখায়নি পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকরা।

প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছিল ১৪তম দিনে লকডাউন শেষ হবে। তবে পরে সম্মিলিত সিদ্ধান্তে লকডাউন আরও সাত দিন বাড়ানো হয়।

মঙ্গলবার (২৩ জুন) সকাল ৮টার দিকে লকডাউন এলাকার সার্ভিস গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় এহসান হোসেন ও ফরিদ ইসলামকে। তারা দুজনেই শিক্ষার্থী, এসেছেন ভোলা থেকে। তারা নাকি জানতেনই না এলাকায় লকডাউন চলছে। তারা দুজন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, হোস্টেল ছেড়ে দিয়েছি। ২৫ তারিখের মধ্যেই সব মালামাল নিয়ে যেতে হবে। না হলে আগামী মাসের ভাড়া গুনতে। তাই সেগুলো নিয়ে যেতে এসেছি। কিন্তু কোনভাবেই এলাকায় ঢুকতে দিচ্ছে না।

একই প্রয়োজনে বরগুনা থেকে এসেছেন ফারজানা ইসলাম অমি। তিনিও হোস্টেল ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি ভেবেছেন আজকে ১৪ তম দিন। তাই হয়তো এলাকায় প্রবেশ করে জিনিসপত্র গুছিয়ে বাড়ি চলে যেতে পারবেন। কিন্তু, কোনওভাবেই তাদের প্রবেশ করতে দেয়নি স্বেচ্ছাসেবক ও পুলিশ। কিন্তু ওই হোস্টেলের দারোয়ানকে ডেকে জিনিসপত্র গুছিয়ে দেওয়ার একটা ব্যবস্থা করেছে স্বেচ্ছাসেবকরা।

এদিকে সকাল থেকেই এলাকার বাইরে বের হওয়ার জন্য লাইন লেগে যায় সার্ভিস গেটে। অনেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আবার প্রয়োজন বুঝে অনেককে বের হতে দেওয়া হয়েছে।

অনেক অনুরোধের পর বের হওয়াদের একজন নিউটেক্স গ্রুপের এইচআর এডমিন এবং অ্যাসিস্টেন্ট ম্যানেজার মোহাম্মদ সবুর রহমান। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, প্রতিষ্ঠানের অনেকের বেতন এখনো হয়নি। তাই অফিস থেকে বারবার যাওয়ার তাগাদা দিচ্ছে। সরকারের এই ব্যবস্থাকে সম্মান জানিয়ে ১৩দিন ঘরেই ছিলাম। কিন্তু, আজ আর কোনওভাবেই পাচ্ছিলাম না সহকর্মীদের ফোনে। তাই অনেক অনুনয় বিনয় করে অফিস যেতে হচ্ছে আজ। তবে, সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।

শেষ দিনের লকডাউন পরিস্থিতি সম্পর্কে সেখানে কর্তব্যরত শেরেবাংলানগর থানার সাব-ইন্সপেক্টর গৌতম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, লকডাউন শুরু থেকে যেমন ছিল, আজকেও তেমনি আছে। আজকে শেষ দিন বলে সুযোগ দেবো, সেটা হতে পারে না। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের কাছে নির্দেশনা না আসবে লকডাউন শেষ, ততক্ষণ পর্যন্ত লকডাউন শেষ বলে কোন কথা নেই। প্রথম থেকে আমরা যেভাবে দায়িত্ব পালন করে আসছি, এখনও আমরা সেভাবেই আছি।