বকেয়া বেতন চাইতে গিয়ে মারধরের শিকার সাংবাদিকরা

1

বকেয়া বেতন দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন ‘বাংলাদেশের খবর’ পত্রিকার চাকরিচ্যুত সাংবাদিকরা। বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় মানববন্ধন করার সময় প্রথমে ব্যানার কেড়ে নেওয়াসহ সাংবাদিকদের লাঞ্চিত করে বসুন্ধরা গ্রুপের সিকিউরিটির লোকজন। পরবর্তীকালে বাংলাদেশের খবর পত্রিকার মালিক প্রতিষ্ঠান মাগুড়া গ্রুপের সামনে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করার সময় হামলার শিকার হন সাংবাদিকরা।
বাংলাদেশের খবর পত্রিকা থেকে চাকুরিচ্যুত সিনিয়র সাংবাদিক আফজাল বারী বলেন, হামলার একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা সাংবাদিকদের কর্মসূচির ব্যানার ছিনিয়ে নেয়। এছাড়া মানববন্ধন কর্মসূচির সঞ্চালকসহ কয়েক সাংবাদিককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। ঢাকা সাব এডিটর্স কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশের খবর থেকে চাকরিচ্যুত আবুল কালাম আজাদ ও সাইফুল ইসলামকে ধাক্কা দিয়ে সেখান থেকে চলে যেতে বলা হয়।

তিনি আরও বলেন, হামলার প্রাথমিক পর্যায়ে ছবি তোলা সম্ভব হলেও সাংবাদিকদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার সময় ছবি তুলতে দেয়নি সন্ত্রাসীরা। এমনকি সেখানে অবস্থান করলে এবং ছবি তুললে আরও লোকবল এনে পিটিয়ে লাশ বানাবে বলেও হুমকি দেয় তারা। আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজও করা হয়।

হামলার বিষয়ে বাংলাদেশ খবর পত্রিকার সম্পাদক আজিজুল ইসলাম বলেন, আমি ওদের (চাকুরিচ্যুত সাংবাদিক) কাছ থেকে শুনেছি। করোনায় আক্রান্ত থাকায় বিস্তারিত খোঁজ নিতে পারিনি।

হামলার ব্যাপারে জানতে মাগুরা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশর খবর পত্রিকার প্রকাশক মোস্তফা কামাল মহিউদ্দিনকে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

প্রসঙ্গত, মাগুরা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল মহিউদ্দিন বাংলাদেশের খবরের প্রকাশক ও মুদ্রক। ঘটনার সময় বাংলাদেশের খবর ও মাগুরা গ্রুপের একাধিক কর্মকর্তা গ্রুপের কার্যালয়ের বারান্দায় উপস্থিত ছিলেন বলে জানিয়েছেন মানববন্ধনে থাকা সাংবাদিকরা।

চাকরিচ্যুত সাংবাদিকরা জানান, সাংবাদিক-কর্মচারীদের তিন মাসের বেতন বকেয়া রেখে করোনার অজুহাত দেখিয়ে গত ৭ এপ্রিল সংবাদপত্র আইনের কোনও তোয়াক্কা না করে ৪ চার মাসের অবৈতনিক ছুটি ঘোষণা করে মালিকপক্ষ। একই সঙ্গে ঘোষণায় বলা হয়, এই ছুটির সময় পত্রিকার প্রকাশনার কাজ বন্ধ থাকবে। অথচ এর অল্প কিছুদিন পরই রাজধানীর ফকিরাপুল থেকে ‘আন্ডারগ্রাউন্ড’ প্রকাশনা চালু করা হয়, যা এখনও অব্যাহত আছে। বেতন-বোনাস বকেয়া রেখে এই অবৈধ ছুটির মধ্যেই গত ৩১ মে থেকে সাংবাদিক-কর্মচারীদের ছাটাই করতে শুরু করে মালিকপক্ষ এবং ছাটাইকৃতদের ন্যায্য পাওনাও দিচ্ছে না। অথচ তারা বাংলাদেশের খবরকে প্রথম শ্রেণির পত্রিকা দেখিয়ে অষ্টম ওয়েজবোর্ড অনুযায়ী বিজ্ঞাপন, রেড কার্ড, ব্যাংক ঋণসহ সরকারের কাছ থেকে সমস্ত সুযোগ-সুবিধা আদায় করছে।