বন্দরগুলোকে সহায়তা দিচ্ছে আইওএম

চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে অ্যাম্বুলেন্স দিয়েছে আইওএমকোভিড-১৯ মোকাবিলায় দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরে স্বাস্থ্য নজরদারি ব্যবস্থা জোরদারে সহায়তা করছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)। কোভিড-১৯ রোগের উপসর্গ থাকা ভ্রমণকারীদের চিহ্নিত করা, পরীক্ষা ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রেফার করার জন্য বন্দরের কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সরকারি কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার  এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় সংস্থাটি।

আইওএম বাংলাদেশের মিশন প্রধান গিওরগি গিগাওরি বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য ভাইরাস বড় হুমকি। বন্দরগুলো অতিক্রমের সময় উপসর্গযুক্ত ভ্রমণকারীদের চিহ্নিতকরণে আমরা বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা করছি। বাংলাদেশের বহির্গামী ও প্রত্যাবর্তনকারী অভিবাসীদের সুরক্ষা নিশ্চিতে সাহায্য করছি। আমরা অবকাঠামোকে শক্তিশালী করা এবং সম্মুখভাগে কাজ করা কর্মীদের জন্য পিপিই দিচ্ছি। একইসঙ্গে এই ভাইরাস কীভাবে সংক্রমিত হয় এবং কীভাবে একে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব সে সম্পর্কে জেনে সেই অনুযায়ী সাড়া দিতে কর্তৃপক্ষের দক্ষতা বৃদ্ধিতে কাজ করছি।’

সংস্থাটি জানান, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, সিলেট ওসমানী আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর, আখাউড়া, বেনাপোল এবং দর্শনা স্থলবন্দর এবং ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেইলওয়ে স্টেশন- এই আটটি বন্দরে সাহায্য করছে সংস্থাটি। আইওএম ইতোমধ্যে বন্দরের কর্মকর্তা ও কর্মীদের জন্য প্রশিক্ষণ, ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই), স্বাস্থ্য সরঞ্জাম বিতরণ, বন্দরসমূহে ভ্রমণকারীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ব্যবস্থাপনার স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসেডিওর (এসওপি) তৈরিতে কারিগরি সহায়তা প্রদান করেছে।বিমান ও স্থলবন্দরগুলোকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সরঞ্জাম দিচ্ছে আইওএম

এ বছরের মার্চ মাস থেকে জাপান সরকারের আর্থিক সহায়তায় আইওএম আটটি বন্দরে কোভিড-১৯ মোকাবেলায় ‘জরুরি চাহিদা মূল্যায়ন’ পরিচালনা ও সম্পন্ন করে। একইসঙ্গে আটটি পিওই টাস্কফোর্স মিটিং ও হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সংকট ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত দুটি বৈঠক আয়োজন করা হয়। চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি অ্যাম্বুলেন্স, আটটি বন্দরে পিপিই এবং অন্যান্য সুরক্ষা সরঞ্জাম প্রদান করে,  বিমান বন্দরগুলোতে ভ্রমণকারীদের ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে দুইটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসেডিওর (এসওপি)  তৈরিতে সরকারকে সহায়তা করে। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেইলওয়ে স্টেশন এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ডেস্ক এবং বুথ স্থাপন করে। এছাড়াও ৩৫২ জন প্রথম সারির কর্মীকে প্রশিক্ষণ প্রদানের পাশাপাশি শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মেডিক্যাল সহায়তার জন্য কর্মী নিয়োগ, ৯ লাখ স্বাস্থ্যবিষয়ক ঘোষণাপত্র, ৫০ হাজারটি যাত্রীর অবস্থান নির্ণয়কারী ফর্ম এবং এক লাখ অন্যান্য স্ক্রিনিং ফর্ম বিতরণ করে আইওএম।

গত ২৩ জুলাই আইওএম হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা (হেলথ স্ক্রিনিং ডেস্ক) প্রদান করে। যেখানে যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে।

যাত্রীদের কাছ থেকে স্বাস্থ্য ঘোষণাপত্র ফর্ম সংগ্রহ করা ও তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় কর্মরত কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য বিমানবন্দরে সুরক্ষামূলক স্ক্রিনযুক্ত এই আংশিক-স্থায়ী স্বাস্থ্য স্ক্রিনিং সুবিধাগুলি স্থাপন করা হয়েছে।

মানবিক সীমান্ত পরিচালনার জন্য  আইওএম সমন্বয়মূলক পদক্ষেপের প্রস্তাব করে। সুপারিশকৃত পদক্ষেপসমূহের মধ্যে রয়েছে, স্বাস্থ্য পরীক্ষার সুযোগ সুবিধা স্থাপন, ভ্রমণকারীদের কাছ থেকে ভ্রমণ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ, সম্মুখভাগে কাজ করা কর্মীদের জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রীর (পিপিই) বিধান, পিওই সমূহে স্যানিটাইজেশন ব্যবস্থার কঠোর প্রয়োগ, ভ্রমণকারী ও পিওই কর্মীদের সামাজিক দূরত্ব সম্পর্কিত সরকারি নির্দেশমালা পালন এবং পিওই কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ।