হাসপাতালে অভিযানে অনুমতির সিদ্ধান্তের বিষয়ে হাইকোর্টের রুল

হাইকোর্টস্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া দেশের কোনও সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান চালাতে পারবে না বলে জারি করা সার্কুলার কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। স্বরাষ্ট্র, স্বাস্থ্য ও আইন মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এ সংক্রান্ত রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) বিচারপতি তারিক-উল-হাকিম এবং বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইয়াদিয়া জামান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাস গুপ্ত।

এর আগে গত ১৭ আগস্ট অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলামের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইয়াদিয়া জামান ও হাসান তারেক পলাশ সার্কুলারটির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এ রিট দায়ের করেন। রিট আবেদনে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া দেশের কোনও সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান চালাতে পারবে না বলে জারিকৃত নির্দেশনাটি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, জানতে চেয়ে রুল জারির আরজি জানানো হয়। একই সঙ্গে রুল শুনানিকালে মন্ত্রণালয়ের ওই সিদ্ধান্তের কার্যক্রম স্থগিত চাওয়া হয়। পাশাপাশি মন্ত্রণালয় থেকে হাসপাতালে অভিযানের বিষয়ে যে টার্স্ক ফোর্স গঠনের কথা বলা হয়েছে, সেখানে কারা কারা আছেন তাদের পরিচয় রিট আবেদনের আরজিতে জানতে চাওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, গত ৪ আগস্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া দেশের কোনও সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান চালাতে পারবে না বলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় নির্দেশনা জারি করে।

মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বলা হয়, ‘মহামারির প্রাদুর্ভাবের পর থেকে দেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন শাখার সদস্যরা নানা বিষয়ে অভিযান পরিচালনা করছে। একটি হাসপাতালে একাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান পরিচালনা করায় তাদের স্বাভাবিক চিকিৎসা কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এসব কারণে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে এক ধরনের চাপা অসন্তোষ বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের সার্বিক কার্যক্রম দেখার জন্য একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। যেখানে জননিরাপত্তা বিভাগের একজন যুগ্ম সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা সদস্য হিসেবে রয়েছেন। ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনও অপারেশন পরিচালনা করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সঙ্গে পরামর্শ করে সেটি করতে হবে।’

নির্দেশনায় আরও বলা হয়, ‘যেকোনও সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের অভিযান পরিচালনা করা থেকে বিরত থাকতে হবে। জরুরি অভিযান পরিচালনার প্রয়োজন হলে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এবং চিকিৎসা শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে তা করতে হবে।’