৮৩ অভিবাসীকে আটকের ঘটনায় আসক’র নিন্দা

আইন ও সালিশ কেন্দ্র

ভিয়েতনাম ও কাতারফেরত মোট ৮৩ জন বাংলাদেশিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ভিয়েতনাম থেকে আসা ৮১ জন নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার ফলে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তারা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছেন বলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। আদালতে উপস্থাপন না করেই অভিবাসীদের ৫৪ ধারায় আটক দেখিয়ে সরাসরি কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছে। বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যম পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়। 

বিবৃতিতে বলা হয়, এই অভিবাসীদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত না করে তাদের জেলে পাঠানো প্রকৃত সত্যতে আড়াল করার অপচেষ্টা বলে আসক মনে করছে। আসক অতি দ্রুত তাদের মুক্তি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছে। একইসঙ্গে আসক সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি করেছে।

আসক জানায়,  গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গত জুলাই মাসে প্রতারণার শিকার অভিবাসী শ্রমিকেরা দেশে ফেরার দাবি জানিয়ে ভিয়েতনামে বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে অবস্থান নিয়েছিলেন। এ সময় সরকার অভিযোগ করে যে, এই শ্রমিকেরা ভিয়েতনামে বাংলাদেশ দূতাবাস দখল করতে গেছেন। এরপর শ্রমিকেরা দেশে ফিরলে দুই সপ্তাহের কোয়ারেন্টিন শেষে গত ১ সেপ্টেম্বর তাদের বিরুদ্ধে তুরাগ থানার পুলিশ গ্রুপভিত্তিকভাবে সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মসূচি পালনসহ বিভিন্ন ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড ঘটাতে সলাপরামর্শ করার অভিযোগ এনে কারাগারে প্রেরণ করে।

আসকের  মতে, অভিবাসীদের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগগুলো তদন্ত না করে তাদেরকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। আসক মনে করে, এর ফলে অভিবাসীদের মতপ্রকাশ ও সমবেত হওয়ার অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে— যা অন্যান্য অভিবাসীদেরকে নিজেদের প্রতি হওয়া অন্যায় ও অবিচার নিয়ে কথা বলতে নিরুৎসাহিত করবে। ফলশ্রুতিতে একটি বিশেষ গোষ্ঠী তথা রিক্রুটিং এজেন্সি ও সংশ্লিষ্ট সুবিধাভোগীরা লাভবান হবে, তাদের কর্মকাণ্ড যথাযথ পর্যবেক্ষণ ও বিচারের আওতায় আসবে না। বাংলাদেশ এবং ভিয়েতনাম উভয় গ্লোব্যাল কমপ্যাক্ট ফর মাইগ্রেশনে স্বাক্ষর করেছে, যেখানে অভিবাসী শ্রমিকদের কর্ম পরিবেশ নিয়ে মতপ্রকাশ ও সমাবেশ করার অধিকারের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আসক মনে করে, বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি বৈদেশিক আয়ের উৎস এ অভিবাসীদের অধিকার রক্ষায় সরকারকে আরও বেশি সংবেদনশীল হতে হবে এবং দায়িত্ব নিতে হবে।