বেতন-ভাতা চান এমপিওভুক্ত কলেজের নন-এমপিও অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকরা

99২৮ বছর ধরে বঞ্চিত এমপিওভুক্ত বেসরকারি কলেজের নন-এমপিও অনার্স ও মাস্টার্স শিক্ষকরা জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন। এর আগে বাংলাদেশ নিগৃহীত অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক পরিষদের ব্যানারে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছেন শিক্ষকরা।
রবিবার (৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ করে শিক্ষকরা জনবল কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত করে বেতন-ভাতার দাবি দাবি জানান। সমাবেশ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. হামিদুর রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক এম মিল্টন মন্ডল। সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, সহ-সভাপতি রেজাউল করিম ও বিজন হালদার। সমাবেশ শেষে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে সংগঠনের পক্ষে স্মারকলিপি নেন সংগঠনের নেতারা।  স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশ নিগৃহীত অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক পরিষদের সভাপতি ইমদাদুল হক মিলন। 

এদিকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে খুলনা, লক্ষ্মীপুর ও নেত্রকোনা জেলা সদরে মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জনবল কাঠামো অনুযায়ী ডিগ্রিস্তর পর্যন্ত পরিচালিত এমপিওভুক্ত কলেজগুলোয় ১৯৯৩ সালে অনার্স-মাস্টার্সের অনুমোদন দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ বিধিবিধান অনুযায়ী নির্ধারিত স্কেলে শিক্ষকদের মূল বেতন দেওয়ার শর্তে অনার্স-মাস্টার্সের বিষয় অনুমোদন নেয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট কলেজের টিউশন ফি থেকে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা দেওয়ার নির্দেশনা দেয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে। এই পর্যায়ে কলেজগুলোর জনবল কাঠামোতে স্থান পায় না অনার্স ও মাস্টার্স স্তরের শিক্ষকদের পদ। ফলে সরকারি বিধিবিধানের আলোকে এমপিওভুক্ত হওয়ার সুযোগ বঞ্চিত হন তারা।

জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সমাবেশে শিক্ষকরা জানান, দেশের ৫ শতাধিক কলেজের অনার্স-মাস্টার্স স্তরের শিক্ষকরা এই পরিস্থিতির মধ্যে পড়েন। তবে গত কয়েক বছরে দুই শতাধিক কলেজ জাতীয়করণ করে সরকার। বাকি থাকে ৩১৫টি কলেজ। এসব কলেজে শিক্ষক রয়েছেন ৪ হাজার। 

সমাবেশে শিক্ষক নেতরা বলেন, ‘একই সমমানের বেসরকারি এসব কলেজের মধ্যে প্রায় দুই শতাধিক কলেজ সরকারি হওয়ায় অনেক শিক্ষক বঞ্চনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন। তারা এখন সরকারি কলেজের শিক্ষক অথচ আমরা এখনও এমপিওভুক্ত হতে পারিনি। প্রধানমন্ত্রী চাইলে আমাদের এই বঞ্চনা শেষ হবে।  এ বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা উপমন্ত্রীকে অনুরোধ করছি। ’

প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেওয়া স্মারকলিপিতে বলা হয়, দেশের বিভিন্ন জেলায় বেসরকারি কলেজ পর্যায়ে অনার্স ও মাস্টার্স কোর্সে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকরা দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে এমপিওভুক্ত কলেজে নন-এমপি শিক্ষক হিসেবে বৈষম্যের শিকার হচ্ছি।  ১৯৯২ সালে সরকারি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ বিধি অনুযায়ী বেসরকারি কলেজে অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। অথচ এই স্তরের জন্য জনবল কাঠামো না হওয়ায় বৈধভাবে নিয়োগ পাওয়ার পরও সকল শিক্ষক আমরা এমপিও বঞ্চিত।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আমাদের সর্বোচ্চ ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা কলেজ থেকে দেওয়া হয়।  কোনও কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২ হাজার থেকে ৭ হাজার পর্যন্ত শিক্ষকদের বেতন দেওয়া হয়। শিক্ষকরা এখন তাদের পরিবার নিয়ে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছেন।