সেই মসজিদের একটি বিদ্যুৎ লাইন অবৈধ

বায়তুল সালাহ জামে মসজিদে বিস্ফোরণনারায়ণগঞ্জের বায়তুস সালাত মসজিদের দুটি বিদ্যুতের লাইনের মধ্যে একটি লাইন অবৈধ। ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) রবিবার (৬ সেপ্টেম্বর) মসজিদটির বিদ্যুৎ লাইন পরীক্ষা করে এ তথ্য পেয়েছে। আজ বিকালে অবৈধ বিদ্যুৎ লাইনের বিষয়টি বিদ্যুৎ বিভাগকে জানিয়েছে তারা। অন্যদিকে জ্বালানি বিভাগের একটি সূত্র জানিয়েছে, মসজিদের নিচে দিয়ে যাওয়া গ্যাসের লাইনটিও অবৈধ। আগামীকাল সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ লাইনটি খুঁড়ে দেখবে।
মসজিদের নিচের লাইন থেকে গ্যাস মসজিদের নিচে জমে থাকার মধ্যে শুক্রবার এশার নামাজের পর একটি লাইনে লোডশেডিং হলে অন্য লাইনটি চালু করতে যান মুয়াজ্জিন। তখন বিদ্যুতের স্পার্ক থেকে মসজিদে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। এতে ৩৭ জন মুসল্লি দগ্ধ হন। এরমধ্যে মারা গেছেন ২১ জন।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, বায়তুস সালাত মসজিদের অনুমোদিত লোড ২০ কিলোওয়াট। ছয়টি এসি, কিছু ফ্যান, লাইট এবং একটি পানির পাম্প চালানো হতো। থ্রি ফেইজের লাইনটিতে ১১ কেভি খানপুর ফিডার থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো। কিন্তু মসজিদে ডিপিডিসির প্রতিনিধি দল পরিদর্শন করে আরও একটি সিঙ্গেল ফেইজ লাইনের সন্ধান পায়। অননুমোদিতভাবে নিউ হবিগঞ্জ ১১ কেভি ফিডার থেকে চেঞ্জওভারের মাধ্যমে মিটারবিহীন অবৈধ সিঙ্গেল ফেইজে এই লাইন নেওয়া হয়েছে।
এক কর্মকর্তা জানান, মসজিদে গিয়ে দেখা যায়, মসজিদের সার্ভিস তার, থ্রি ফেইজ মিটার, মসজিদের বক্স ট্রান্সফরমারটি অক্ষত অবস্থায় আছে। এই ট্রান্সফরমার দিয়ে মসজিদসহ আশপাশের বাড়িগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। ফলে বিদ্যুতের কারণে মসজিদে আগুন লাগেনি বলেই মনে হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান বলেন, আমরা মসজিদগুলোতে সরেজমিন এসি এবং বিদ্যুৎ সংযোগ পরীক্ষা করা শুরু করেছি। বায়তুস সালাত মসজিদে দুটি লাইন আমরা পেয়েছি। তারমধ্যে একটি বৈধ প্রি-পেইড মিটারের। আর অন্যটি সিঙ্গেল ফেইজ লাইন অবৈধভাবে তারা নিয়েছে। তিনি বলেন, কোনও মসজিদে আমরা যদি অবৈধ লাইন পাই তবে তা কেটে দেওয়া হবে।
তিতাস সংশ্লিষ্টদের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অভিযোগ করেন, মসজিদের নিচ দিয়ে তিতাসের গ্যাসের দুটি লাইন গেছে। এরমধ্যে একটি লাইন অবৈধ। যদিও মসজিদে গ্যাসের ব্যবহার নেই। কিন্তু অবৈধ গ্যাস লাইনের কারণেও ঘটতে পারে এই দুর্ঘটনা।
এদিকে গ্যাস লাইনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী মো. মামুন বলেন, আমরা এখনও নিশ্চিত নই। অনেকেই অনেক অভিযোগ করছে। সরাসরি তিতাসকেই দোষ দিচ্ছে। ঘুষের প্রসঙ্গও এসেছে। আমরা তদন্ত করতে চাচ্ছি। কিন্তু এখন আর কেউ নিশ্চিত করে বলছেন না কে কাকে ঘুষ দিয়েছে। এদিকে বায়তুস সালাত মসজিদের নিচ দিয়ে যে গ্যাসের লাইন আছে তা কী অবস্থায় আছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আগামীকাল মাটির নিচে খুঁড়ে দেখা হবে। এরপরই নিশ্চিত হওয়া যাবে সেখানে অবৈধ সংযোগ ছিল কিনা।