নদী বিনাশী সকল প্রকল্প ও অপতৎপরতা বন্ধের আহ্বান জাতীয় কমিটির

তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা কমিটিবাংলাদেশে নদী বিনাশী প্রকল্পকে ‘ধ্বংস প্রকল্প’ উল্লেখ করে সেসব বাতিল করার আহবান জানিয়েছে তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি। আগামীকাল বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে আজ শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ এবং সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ এক যুক্ত বিবৃতিতে এই আহবান জানান।
বিবৃতিতে তারা বলেন, উন্নয়নের নামে প্রাণ-প্রকৃতি-সম্পদ, জনস্বাস্থ্য-জনজীবন ও জীবিকার বিপরীতে মুনাফা-অন্ধ তৎপরতায় বাংলাদেশের বাস্তুসংস্থান, নদী-সমুদ্র-ভূগর্ভস্থ পানি সম্পদ তথা জননিরাপত্তা সবই ভয়াবহভাবে আক্রান্ত। এর কারণে জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের বিপদও বাড়ছে।
বিবৃতে বলা হয়, নদীগুলো যেভাবে খুন হচ্ছে কারণ হিসাবে ভাগ করলে এর পেছনে তিনটি উৎস শনাক্ত করা যায়। এগুলো হল প্রথমত, বাংলাদেশের নদীবিদ্বেষী উন্নয়ন কৌশল। দ্বিতীয়ত, দেশের নদী দখলদারদের সঙ্গে পুলিশ প্রশাসনসহ রাজনৈতিক ক্ষমতার যোগসাজশ। এবং তৃতীয়ত, নদীর পানি নিয়ে বাঁধ ও নদী সংযোগ পরিকল্পনাসহ ভারতের অন্যায় একতরফা আগ্রাসী তৎপরতা।
যে ‘উন্নয়ন’ নদী বিপন্ন করে তাতেও জিডিপি বৃদ্ধি পেতে পারে কিন্তু তা প্রাণজগতকে বিপন্ন করে, শেষ পর্যন্ত মানুষের সামগ্রিক অস্তিত্ব তাতে বিপদগ্রস্ত হয়। রামপাল সহ উপকুল জুড়ে সব কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প, নির্বিচার নির্মাণকাজ আর তার সঙ্গে বেড়ে চলা ইটের ভাটা, অপরিকল্পিত অপরিণামদর্শী সেতু ও সড়ক নির্মাণ, বন নিধন সবই ‘উন্নয়ন প্রকল্প’ নামেই নদীসহ পানিসম্পদকে বিপর্যস্ত করছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিকাংশ প্রকল্পও নদীর স্বাভাবিক প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করে ভাঙন ও নদীর মৃত্যু ত্বরান্বিত করছে। ডেল্টা প্ল্যান এই ধারারই আগ্রাসী প্রকল্প। নদী বাংলাদেশের শক্তি, তাকে বিপর্যস্ত করে যেসব প্রকল্প তা উন্নয়ন নয় ধ্বংস প্রকল্প।
তারা রামপাল, রূপপুরসহ নদী ও প্রাণবিনাশী সকল প্রকল্প বাতিলের দাবি জানায় এবং প্রাণ-প্রকৃতি ও মানুষ কেন্দ্রিক উন্নয়ন ধারা নিশ্চিত করতে দেশবাসীকে সোচ্চার হবার আহবান জানায় জাতীয় কমিটি।