সহিংসতা বন্ধে ১৬ দিনের কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নেমেছেন নারীরা

মানববন্ধনে নারীরা

আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে সহিংসতা বন্ধে ১৬ দিনের কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নেমেছেন নারীরা৷ ২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়৷

সোমবার (৩০ নভেম্বর) নারী  ওই কর্মসূচির ষষ্ঠ দিন চলছে৷ দেশের বিভিন্ন জায়গায় এটি পালন করছেন প্রতিবাদী নারীরা৷ রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের উদ্যোগে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়৷ 

মানববন্ধনে ‘এনসিউরেন্স সোশ্যাল প্রটেকশন ফর অল’, ‘নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ কর’, ‘বাল্যবিবাহ বন্ধ কর, মেয়ে শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ নিশ্চিত কর’, ‘ছেলে শিশুর প্রতি যৌন নির্যাতন বন্ধে আইনি ব্যবস্থা চাই’, ‘নারীর প্রতি শ্রমবৈষম্য বন্ধ কর’ ইত্যাদি লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে অংশ নেন বিভিন্ন বয়সের নারীরা৷  

মানববন্ধনে নারীরা

মানববন্ধনে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের উপ-পরিচালক শাহনাজ সুমি বলেন, ‘দেশের রাষ্ট্র পরিচালনা থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত সব ক্ষেত্রেই বর্তমানে নারীর সক্রিয় বিচরণ লক্ষণীয়। বাংলাদেশের উন্নয়নে নারীরা পারিবারিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাগত দায়িত্ব পালনসহ রাজনীতি ও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। স্বাধীনতার ৪৯ বছরে আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক খাতের বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। পারিবারিক গণ্ডির বাইরে বেরিয়ে ক্রমবর্ধমান হারে এদেশের নারীরা আজ কম-বেশি সব ক্ষেত্রেই সাফল্যের সঙ্গে অংশ নিচ্ছে, নেতৃত্ব দিচ্ছে। তবে প্রত্যাশিত নারী-পুরুষ, সমতায় পৌঁছুতে ত্যদের আরও অনেক দূর এগিয়ে যেতে হবে।’ 

মানববন্ধনে নারীরা

মানববন্ধন থেকে নারী সংহিসংতা বন্ধে কয়েকটি দা হানান তারা। সেগুলোর মধ্যে আছে, নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ করতে হবে। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সম্পদ ও সম্পত্তিতে নারীর সমঅধিকার নিশ্চিত করতে বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে হবে, মেয়েশিশুর স্বাভাবিক বিকাশ নিশ্চিত করতে হবে। নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্যমূলক আইনের পরিবর্তন করতে হবে। আইনের সঠিক, নিরপেক্ষ ও সময়ানুগ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী ঘটনাস্থলকে মুখ্য বিবেচনা না করে ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন বা এ ধরনের আমলযোগ্য অপরাধে ঘটনায় কোনও বৈষম্য, বিলম্ব ছাড়াই তাৎক্ষণিকভাবে থানায় অভিযোগ লিপিবদ্ধ করতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। যৌতুক আদান-প্রদানকারীকে এবং বাল্যবিবাহের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে এবং তাদের বিরদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। বিচার বিভাগ সংশ্লিষ্ট সব পর্যায়ের সেবাদানকারী সদস্যদের জেন্ডার সংবেদনশীল করে গড়ে তুলতে হবে এবং জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। নারী নির্যাতনকারীকে রাজনৈতিক, সামাজিক ও প্রশাসনিক আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া বন্ধ করতে হবে। প্রতিটি থানায় ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার চালু করতে হবে, যা নারী পুলিশ দ্বারা পরিচালিত হবে।  ওয়াজ মাহফিলসহ সব প্রকার ধর্মীয় সভায় নারীবিরোধী বক্তব্য আইন করে বন্ধ করতে হবে। যেকোনও ধরনের নারী নির্যাতনের ঘটনায় সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। প্রচলিত আইন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। সর্বজনীন পারিবারিক আইন চালু করতে হবে।