গির্জার ঘণ্টাধ্বনি কী বার্তা দেয়

সৈয়দপুর ক্যাথলিক গির্জাখ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী সবার কাছে বড়দিন একটি পুণ্যময় দিন। যিশুখ্রিষ্টের জন্ম কবে হয়েছিল তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ নেই পবিত্র বাইবেলে। খ্রিষ্টধর্মের প্রবর্তক জন্ম নিয়েছিলেন অলৌকিকভাবে। তাঁকে স্মরণ করতে গির্জায় প্রার্থনার আহ্বানের জন্য বাজানো হয় ঘণ্টাধ্বনি। যিশুখ্রিষ্টের অনুসারীরা মনে করেন, এই ঘণ্টাধ্বনি শুভ সংবাদের বার্তা ছড়িয়ে দেয়।

খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, যিশুখ্রিষ্ট পৃথিবীতে মানুষ রূপে জন্মগ্রহণ করেছেন। পৃথিবীর সব পাপ থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে এবং মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ককে আরও সুসংহত করতেই তাঁর আবির্ভাব। যিশুর আগমনের এই ক্ষণ স্মরণ করতেই অনুসারীরা বিশ্বব্যাপী ধর্মীয় ও সামাজিকভাবে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন পালন করে থাকে। তাদের বিশ্বাস, ডিসেম্বরের কোনও এক সময় যিশুর জন্ম হয়েছিল।

খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরা গির্জার ঘণ্টাধ্বনি শুনে প্রার্থনার জন্য প্রস্তুতি নেন। প্রহর অনুযায়ী এই ঘণ্টা বাজানো হয়ে থাকে। তবে একসঙ্গে কতবার বাজবে তার কোনও নিয়ম নেই বলে জানান পবিত্র জপমালা রানীর গির্জার (তেজগাঁও ক্যাথলিক চার্চ) সহকারী ফাদার রিপন ডি রোজারিও। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রাচীন ইতিহাস থেকেই বিভিন্ন দেশে গির্জায় ঘণ্টা বাজানোর প্রচলন রয়েছে। যিশুখ্রিষ্ট যখন প্রবেশ করেন তখন এই ঘণ্টা দেওয়া হয়। মুসলিম ঘরে নতুন সন্তান এলে আজান শোনা যায়। একইভাবে আমাদের প্রথাগত দিক হলো ঘণ্টাধ্বনি; এটি আমাদের জয়োল্লাস ও আনন্দের সাংস্কৃতিক চিহ্ন।’  

বিভিন্ন প্রহরে ঘণ্টা দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন তেজগাঁও ক্যাথলিক চার্চের সহকারী ফাদার। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী ভোর ৬টা, দুপুর ১২টা, বিকাল ৩টা, সন্ধ্যা ৬টা, রাত ৯টা ও রাত ১২টায় ঘণ্টা বাজানো হয়ে থাকে। তার কথায়, শুভ সংবাদ প্রকাশিত হলে ঘণ্টাধ্বনির মাধ্যমে আনন্দের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। উদাহরণ হিসেবে তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের কোনও গির্জায় পোপ নির্বাচিত হলে গির্জাঘরে ঘণ্টা বেজে ওঠে।

বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের খ্রিষ্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব নির্মল রোজারিও বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘প্রার্থনার মাধ্যমে যিশুকে স্মরণের জন্য গির্জায় প্রহর অনুযায়ী ঘণ্টা বাজানো হয়ে থাকে। প্রার্থনার জন্য সবাইকে আহ্বান জানানোই ঘণ্টাধ্বনির উদ্দেশ্য।’