ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে দিহান: পুলিশ

রাজধানীর কলাবাগানের মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে অভিযুক্ত ইফতেখার ফারদিন দিহান। শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে সেগুনবাগিচায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার সাজ্জাদ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। দিহান ওই স্কুলছাত্রীর বাবার দায়ের করা মামলার একমাত্র আসামি।

পুলিশ জানায়, জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে দিহান ধর্ষণের কথা স্বীকার করে। সে ঘটনা লুকাতে চেয়েছিল। এজন্যই ধর্ষণের পর মেয়েটি অচেতন হয়ে পড়লে সে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পুলিশ তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেবে। আদালতে তুলে তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে ‌বলে জানান তিনি।

পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, মেডিক্যাল টেস্ট কিংবা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ওই স্কুলছাত্রীর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। এর জন্য আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য ডাক্তারদের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে।

তিনি জানান, এই ঘটনার পেছনে ইন্দনদাতা হিসেবে অন্য কারও সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে সতর্ক রয়েছে পুলিশ।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাজধানীর আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ওই স্কুলছাত্রীকে নিয়ে আসে তিন-চার জন। ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। স্কুলছাত্রীর সঙ্গীরা দাবি করে, জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিয়ে অসুস্থ হয়ে সে মারা গেছে। তবে মেয়েটির বাবা অভিযোগ করেছেন, তাকে পান্থপথের ডলফিন গলির একটি বাসায় ডেকে নিয়ে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। তিনি ইফতেখার ফারদিন দিহানকে আসামি করে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাতে মামলা দায়ের করেন। শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) মামলা বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের নিউ মার্কেট জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) আবুল হাসান।

আবুল হাসান বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ এর ২ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেছেন নিহত কিশোরীর বাবা। মামলায় ইফতেখার ফারদিন দিহানকেই একমাত্র আসামি করা হয়েছে। আমরা  বৃহস্পতিবারই (৭ জানুয়ারি) তাকে আটক করেছি। এখন তাকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

এ ঘটনায় দিহানের তিন বন্ধুকে আটকের বিষয়ে সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল হাসান বলেন, বাকি তিন জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। তাদের ডিজিটাল ডিভাইসগুলো আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছি। তাদের কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদেরও মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

পুলিশের এসি আবুল হাসান বলেন, প্রতিবেদনে মেয়েটির শরীরে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন আলামত জব্দ করেছে।

আরও পড়ুন-

ধর্ষণকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে মেয়েটিকে হাসপাতালে নেয় দিহান

কলাবাগানের ঘটনায় ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ এনে মামলা

কলাবাগানে কিশোরী হত্যা, গ্রেফতার ৩

রাজধানীতে জন্মদিনে ডেকে কিশোরীকে নির্যাতনের পর হত্যার অভিযোগ