আজ সাজা পরোয়ানা দেওয়া যায়নি ২১ আগস্ট হামলা মামলার আসামি ইকবালকে

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় সরাসরি জড়িত  হরকাতুল জিহাদের সদস্য ইকবাল হোসেন জাহাঙ্গীর ওরফে সেলিমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধা ৬টার পর ঢাকা ম্যাট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বাকী বিল্লাহ এ আদেশ দেন। আজ সঠিক সময়ে ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে না পারায় তাকে সাজা পরোয়ানা দেওয়ায় সম্ভব হয়নি।

সংশ্লিষ্ট আদালতের বেন্সসহকারী শামসুদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ইকবালকে সন্ধ্যা ৬টার পরে আদালতে হাজির করা হয়। অফিস সময় পার হয়ে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালে বিচারক ছিলেন না। পরে ঢাকা ম্যাট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বাকী বিল্লাহ তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

তিনি আরও বলেন, ট্রাইব্যুনাল আইন অনুযায়ী সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর কথা ছিল ওই আসামিকে। তবে আসামি সঠিক সময় ট্রাইবুনালে হাজির না হওয়ায় সাজা পরোয়ানা দেওয়ায় সম্ভব হয়নি। তাকে পরে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হবে।ইকবাল হোসেন জাহাঙ্গীর ওরফে সেলিম

এর আগে রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকা থেকে ইকবাল হোসেন জাহাঙ্গীর ওরফে সেলিমকে  গ্রেফতার করেন র‌্যাব সদস্যরা। র‌্যাবের ডিজি আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী জানান, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার সঙ্গে জড়িত সেলিমকে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার ভোররাতে রাজধানীর দিয়াবাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ইকবালের গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহে। র‌্যাব জানায়, ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় অংশ নেওয়ার পর ঝিনাইদহে চলে যায় ইকবাল। কয়েক মাস বাড়িতে থাকার পর সে আত্মগোপনে চলে যায়। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় সে কখনও নিরাপত্তাকর্মী, কখনও রিকশাচালক, কখনও মেকানিক হিসেবে নিজের নাম পরিবর্তন করে কাজ করেছিল। সে ২০০৮ সালে দেশত্যাগ করে। প্রবাসে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় প্রথমে সেলিম এবং পরবর্তীতে জাহাঙ্গীর নাম ধারণ করে। এক পর্যায়ে সে প্রবাসে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে চিহ্নিত হলে তাকে ২০২০ সালের শেষের দিকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। দেশে ফেরত এসে জঙ্গি ইকবাল আত্মগোপনে থেকে সমমনাদের সঙ্গে পুনরায় যোগাযোগ স্থাপন করে।

জানা যায়, জঙ্গি ইকবাল এইচএসসি পাস। স্কুল ও কলেজে পড়ার সময় ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। ইকবাল ১৯৯৪ সালে কেসি কলেজ, ঝিনাইদহে ছাত্র সংসদে ছাত্রদলের নির্বাচিত শ্রেণি প্রতিনিধি ছিল। ১৯৯৫ থেকে ১৯৯৮ পর্যন্ত মালয়শিয়ায় প্রবাসী কর্মজীবী হিসেবে অবস্থান করে। দেশে ফিরে ইকবাল আইএসডি ফোন ও অন্যান্য ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু করে। এসময় সে সর্বহারা ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়ে।

২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় রায় ঘোষণা করা হয়। পুরনো ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইবুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন এই রায় দেন। আদালত এ মামলায় ৪৯ জন আসামির মধ্যে ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। অপর ১১ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন-

‘২১ আগস্ট আ.লীগের সভামঞ্চে গ্রেনেড ছুড়েছিল ইকবাল’

শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র হয় যেভাবে

যেভাবে রায়ের পর্যায়ে এলো ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলা