এনটিআরসিএ’র গণবিজ্ঞপ্তি স্থগিত, রিটকারীদের নিয়োগ দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) ৫৪ হাজার নিবন্ধনধারীর নিয়োগ সংক্রান্ত গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের এক সপ্তাহের মধ্যে তা স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে নিবন্ধনধারীদের মধ্যে রিটকারীদের এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাত দিনের মধ্যে নিয়োগের সুপারিশ করতে এনটিআরসিএ’কে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

এনটিআরসিএ’র চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা মামলার শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (৬ মে) বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া ও ব্যারিস্টার মহিউদ্দিন হানিফ। অন্যদিকে এনটিআরসিএ’র পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. ফারুক হোসেন।

পরে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া বলেন, ‘হাইকোর্ট তার আদেশে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এক থেকে ১২তম নিবন্ধনধারীদের মধ্যে রিটকারী প্রায় দেড় হাজার জনকে এক সপ্তাহের মধ্যে নিয়োগের সুপারিশ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে গত ৩০ মার্চ দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত গণবিজ্ঞপ্তি এই সময়ের জন্য স্থগিত করেছেন আদালত।’

এর আগে ২০১৭ সালের ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট একটি রায় দিয়েছিলেন। ওই রায়ে কয়েক দফা নির্দেশনা ছিল। তার মধ্যে একটি ছিল, সম্মিলিত মেধা তালিকা অনুযায়ী রিট আবেদনকারী এবং অন্য আবেদনকারীদের নামে সনদ জারি করতে হবে। কিন্তু দুই বছরেও রায় বাস্তবায়ন না করায় রিট আবেদনকারীরা আদালত অবমাননার আবেদন করেন। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এ রুল বিবেচনাধীন থাকা অবস্থায় ৩০ হাজার প্রার্থীর জন্য গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে এনটিআরসিএ। এরপর নিয়োগ থেকে বিরত থাকতে একটি আবেদন করেন রিটকারীরা। 

প্রসঙ্গত, এর আগে গত ৭ মার্চ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এক থেকে ১২তম নিবন্ধনধারীদের এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগের সুপারিশ করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ১৫ দিনের মধ্যে এনটিআরসির চেয়ারম্যানকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। একই সঙ্গে নিবন্ধনধারীদের নিয়োগ সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়ন করতে বলেন আদালত। আদালতের এই আদেশ বাস্তবায়ন না করায় পুনরায় এনটিআরসিএ’র চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করা হয়।

২০২০ সালের ১৫ ডিসেম্বর বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে বিজ্ঞপ্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা  দেন হাইকোর্ট। এই সময়ে আদালত অবমাননার বিষয় নিষ্পত্তি না করে শিক্ষক নিয়োগে তারা কোনও বিজ্ঞপ্তি দিতে পারবে না বলে আদেশে বলা হয়। নিবন্ধিত নিয়োগবঞ্চিত কয়েক শতাধিক প্রার্থীর আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।