মেয়রের ঐচ্ছিক তহবিলের অর্ধকোটি টাকা পেলেন যারা

দলীয় নেতাকর্মী ও কাউন্সিলরদের নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রের জন্য ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে রক্ষিত মেয়রের ঐচ্ছিক তহবিলের ৫০ লাখ ৫০ হাজার টাকা। নেতাকর্মীদের মেয়ের বিয়ে, উন্নত চিকিৎসা, সন্তানের লেখা পড়ার সার্বিক খরচ মেটানোসহ মানবিক কারণে তারা এই অর্থ বরাদ্দ পান। আর কাউন্সিলরদের নামে বরাদ্দ দেওয়া অর্থ এলাকার মসজিদের উন্নয়ন ও সংস্কারের জন্য দেওয়া হয়েছে।

গত ২৮ এপ্রিল ডিএসসিসির সচিব আকরামুজ্জামান সই করা এক অফিস আদেশে এসব অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়। আদেশে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সচিব প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তাকে এসব অনুদানের টাকা পরিশোধের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়।

অফিস আদেশ থেকে দেখা গেছে, উত্তর কমলাপুর বড় জামে মসজিদ পুনর্নির্মাণের জন্য মসজিদের মোতাওয়াল্লী জামাল উদ্দিনের নামে ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ডিএসসিসির ২১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ আসাদুজ্জামানের নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫ লাখ টাকা। এই টাকা দিয়ে তিনি বাইতুল ফালাহ জামে মসজিদ, দক্ষিণ নীলক্ষেত আ/এ জামে মসজিদ, বায়তুল সালাম জামে মসজিদ, শাহবাগ থানা জামে মসজিদ ও মসজিদ ই-নুর এর হল উন্নয়ন করবেন।

১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এনামুল হকের অনুকূলে চামেলীবাগে অবস্থিত বাইতুল জান্নাত জামে মসজিদের উন্নয়নে ১০ তলা ভবন নির্মাণের জন্য দুই লাখ টাকা ও শান্তিনগরে অবস্থিত পিডব্লিউডি জামে মসজিদের উন্নয়নে কাজের জন্য তিন লাখ টাকার আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে।

১০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মারুফ মনসুর আহমেদকে দু’টি মসজিদের গেট নির্মাণের জন্য চার লাখ টাকা ও অপর একটি মসজিদের ভেতর ও বাহিরের আস্তর এবং অজুখানা সংস্কারের জন্য এক লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

২৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মোকাদ্দেস হোসেন জাহিদ পেয়েছেন সাড়ে তিন লাখ টাকা। এই অর্থ থেকে তিনি এলাকার বায়তুল আমান জামে মসজিদের নির্মাণ কাজের জন্য দেড় লাখ টাকা, মাক্কি জামে মসজিদের টাইলস, ফিটিং, রং এবং সাউন্ড সিস্টেমের জন্য এক লাখ টাকা এবং বাইতুস সালাত জামে মসজিদের টাইলস এবং সিডির রেলিং প্রস্তুতের জন্য এক লাখ টাকা ব্যয় করবেন।

স্বামীর চিকিৎসার জন্য দুই লাখ টাকা পেয়েছেন আওয়ামী লীগ নেত্রী নাহিদা। ঋণ পরিশোধের জন্য হাজারীবাগ থানা আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মো. শাহজাহান পেয়েছেন দুই লাখ টাকা। নিউ মার্কেট থানা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক খবীর আহমেদকে মানবিক কারণে দুই লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ২২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ রওশন রহমান স্বামীর চিকিৎসা বাবদ খরচ মিটানোর জন্য পেয়েছেন দুই লাখ টাকা।

২২ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মো. ইউসুফ মেয়ের বিয়ের জন্য পেয়েছেন দুই লাখ টাকা। একই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক মনা মিয়াকে চিকিৎসার জন্য দুই লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

চিকিৎসার জন্য ১৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য হাফিজ উদ্দিন দেওয়ান পেয়েছেন দুই লাখ টাকা। ১৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ৫ নং ইউনিট সভাপতি মো. আশরাফ উদ্দিন তার ও স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য পেয়েছেন দুই লাখ টাকা। দক্ষিণ গোড়ানের আহসানুল হক পড়াশোনার খরচ মেটানোর জন্য পেয়েছেন এক লাখ টাকা।

ট্যানারি ইউনিট আওয়ামী লীগের ১নং সদস্য টিএম লিয়াকত হোসেন মেয়ের পড়াশোনার জন্য পেয়েছেন এক লাখ টাকা।

পশ্চিম ভাগলপুর ইউনিট আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. আলীর চোখ অপারেশনের জন্য এক লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। স্বামীর উন্নত চিকিৎসার জন্য ৬০ হাজার টাকা পেয়েছেন নিউ মার্কেটের বাসিন্দা সুলতানা কবির।

মানবিক কারণে পান্থপথ ইউনিট আওয়ামী লীগের শ্রম সম্পাদক মো. রুস্তম আলী পেয়েছেন ৫০ হাজার টাকা। বাবার চিকিৎসার জন্য নগরভবন মসজিদের মুয়াজ্জিন-কাম খাদেম পেয়েছেন ৫০ হাজার টাকা। মানবিক কারণে পান্থপথ ইউনিট আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মো. মান্নানকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। মানবিক কারণে উত্তর মাদারটেকের সুলতানা রাজিয়াকে ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য গোড়ানের মনসুর রহমান আফনান পেয়েছেন ৫০ হাজার টাকা। ধানমন্ডির ভুতের গলির মোহাম্মদ সুজন স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকা পেয়েছেন।

মানবিক কারণে ২৫ হাজার টাকা করে পেয়েছেন পান্থপথ ইউনিট আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য মো. জহুরুল; মো. হানিফ, মোসলেম, রমজান আলী, সেন্টু, শেফালী খাতুন।

উন্নত চিকিৎসার জন্য ২০ হাজার টাকা করে পেয়েছেন নিউ মার্কেট থানার কলাবাগান এলাকার ইসমাইল হোসেন মজিব, মোহাম্মদ এমদাদুল হক ও আকম সিরাজুল হক।

বীর মুক্তিযোদ্ধার উন্নত চিকিৎসার জন্য নিউমার্কেট থানার মো. সিরাজুল ইসলাম পেয়েছেন ২০ হাজার টাকা; একই এলাকার মো. বাদল রহমান, আসির উদ্দিন আহমেদ ও একেএম জাহিদুল ইসলামও ২০ হাজার টাকা করে পেয়েছেন।