মামলা নিয়ে প্রথম আলো কর্তৃপক্ষ যা বললো

প্রথম আলোর সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হওয়ার পর থানার সামনে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ওপর আঘাত হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আপনারা জানেন রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এখন আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় বিষয়টি সমাধানের দিকে যাব। এবং প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে যা যা করণীয় করা হবে।

তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রোজিনা ইসলাম এই মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা নিয়ে বেশ কিছু রিপোর্ট করছিলেন। যার মধ্যে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির রিপোর্ট ছিল। আমরা মনে করছি, এতে তিনি মন্ত্রণালয়ের আক্রোশের শিকার হয়ে থাকতে পারেন।

 প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক ও সাহিত্যিক আনিসুল হক বলেন, লেখক ও সাংবাদিক হিসেবে বলতে চাই- মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা মৌলিক অধিকার। মত ও কথা বলার অধিকার মৌলিক অধিকার। রোজিনা অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা করেছেন। এগুলো সরকারকে সাহায্য করে। এটা নিয়ন্ত্রণ করলে দুর্নীতি যারা করেন তারা উৎসাহিত হবে। রোজিনার শিশু সন্তান রয়েছে এবং তার নিজের শারিরীক অবস্থা ভালো না। তিনি আজ কোভিডের টিকা নিয়েছেন। রাষ্ট্র মানবিক না হলে তার চেয়ে দুঃখজনক কিছু থাকে না। বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৫০ বছরে সাংবাদিকদের স্বাধীনতা চোখের মণির মতো রক্ষা করতে হবে বলেই মনে হচ্ছে।

উল্লেখ্য, সোমবার (১৭ মে) পাঁচ ঘণ্টারও বেশি সময় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আটকে রেখে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয় সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে।

রোজিনা ইসলাম পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সোমবার (১৭ মে) বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সচিবালয়ের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। পরে খবর পাওয়া যায় তাকে সেখানে কর্মকর্তারা একটি কক্ষে আটকে রেখেছেন।

রোজিনা ইসলামকে আটকে রাখার খবর পেয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওই ভবনে যান। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে রোজিনাকে আটকে রাখার কারণ সম্পর্কে গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চাইলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা কিছুই জানাননি।

একপর্যায়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে কিছু নথি সরানোর অভিযোগ এনে পুলিশ ডাকা হয়েছে। পরে রোজিনা ইসলামকে শাহবাগ থানায় নিয়ে রাখা হয়েছে। পুলিশ জানায়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে থানায় আনা হয়েছে।

প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সাজ্জাদ শরীফ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে রোজিনা ইসলাম এই মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা নিয়ে বেশ কিছু রিপোর্ট করছিলেন। যার মধ্যে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির রিপোর্ট ছিল। আমরা মনে করছি, এতে তিনি মন্ত্রণালয়ের আক্রোশের শিকার হয়ে থাকতে পারেন।’

আরও পড়ুন-