খাদেম রহমত হত্যা: পলাতক ফাঁসির আসামি জেএমবি সদস্য গ্রেফতার

রংপুরের কাউনিয়ায় মাজারের খাদেম রহমত আলী হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ও জঙ্গি সংগঠন জেএমবি সদস্য আব্দুর রহমান ওরফে চান্দু মিয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ)। মঙ্গলবার (২৫ মে) রাজধানীর বারিধারায় এটিইউয়ের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসলাম খান এই তথ্য জানান।

মোহাম্মদ আসলাম খান বলেন, ‘চান্দু মিয়া দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিল। এই হত্যা মামলার সবাই বিভিন্ন সময় গ্রেফতার হলেও সে কৌশলে নানা স্থানে অবস্থান করেছে। ২৪ মে রাতে সাভারের গেন্ডা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।’

জেএমবির ইসাবা গ্রুপের অন্যতম সদস্য চান্দু মিয়া পুলিশকে জানিয়েছে, খাদেম রহমত আলী সুরেশ্বরের পীরের অনুসারী ছিলেন। তার বাড়ির পাশে একটি মসজিদ রয়েছে। মসজিদের পাশে ঘর তুলে প্রতি বৃহস্পতিবার খাদেম তার অনুসারীদের নিয়ে গান বাজনা করতেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে জেএমবির সদস্যরা তাকে হত্যা করে।

২০১৫ সালের ১০ নভেম্বর রাতে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার টেপামধুপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি, পল্লী চিকিৎসক ও সুরেশ্বরের পীরের মাজারের খাদেম রহমত আলী খুন হন। স্থানীয় বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে চৈতার মোড়ে জেএমবির সদস্যরা তাকে গলা কেটে হত্যা করে। এ ঘটনায় রহমতের ছেলে অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ ১৩ জঙ্গির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।

অভিযুক্তরা হলো– মাসুদ রানা, ইছাহাক আলী, লিটন মিয়া, সরওয়ার হোসেন, সাদাত ওরফে রতন, তৌফিকুল ইসলাম, আবু সাঈদ, সাখাওয়াত হোসেন, জাহাঙ্গীর হোসেন, বিজয় ওরফে আলী ওরফে দর্জি ও বাবুল আখতার। এছাড়া আসামি জঙ্গি নজিবুল ইসলাম ও চান্দু মিয়া পলাতক ছিল। নজিবুল গ্রেফতার হলেও চান্দুকে এতদিন গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

২০১৮ সালের ১৮ মার্চ খাদেম রহমত আলী হত্যা মামলায় সাত জেএমবি জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন রংপুরের বিশেষ জজ আদালতের বিচারক নরেশ চন্দ্র সরকার। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানারও আদেশ দেওয়া হয়। এছাড়া চার জনকে বেকসুর খালাস দেন আদালত।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলো– জেএমবির রংপুর অঞ্চলের কমান্ডার মাসুদ রানা ওরফে মন্ত্রী, এছাহাক আলী, লিটন মিয়া ওরফে রফিক, বিজয় ওরফে আলী ওরফে দর্জি, সাখাওয়াত হোসেন, সরওয়ার হোসেন ওরফে সাবু ও চান্দু মিয়া। তাদের মধ্যে ছয় জন রংপুর কারাগারে আছে। সর্বশেষ গ্রেফতার চান্দু মিয়ার বাড়ি রংপুরের পীরগাছায়।

উচ্চ আদালতে জঙ্গিদের ডেথ রেফারেন্স শুনানি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।