গার্ড অব অনারে নারী ইউএনও’র বিকল্প নির্ধারণের সুপারিশের প্রতিবাদ মহিলা পরিষদের

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যুর পর গার্ড অব অনার দেওয়ার ক্ষেত্রে নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বিকল্প ব্যক্তি নির্ধারণে সংসদীয় কমিটির সুপারিশের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।

সোমবার (১৪ জুন) বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানুর পাঠানো এক বিবৃতিতে এই প্রতিবাদ জানানো হয়।

প্রসঙ্গত, গত ১৩ জুন সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যুর পর গার্ড অব অনার দেওয়ার ক্ষেত্রে নারী ইউএনও-র বিকল্প ব্যক্তি নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়।  

যৌথ বিবৃতিতে মহিলা পরিষদের সভাপতি  ডা. ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, ‘আমরা তীব্র ক্ষোভ ও গভীর বিস্ময়ের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যুর পর গার্ড অব অনার দেওয়ার ক্ষেত্রে নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বিকল্প ব্যক্তি নির্ধারণের সুপারিশ করেছে। এই সুপারিশে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ তীব্র প্রতিবাদ ও ক্ষোভ জানাচ্ছে। এই ধরনের সুপারিশ স্বাধীন বাংলাদেশে একেবারেই অগ্রহণযোগ্য, সংবিধান পরিপন্থী, নারীর মানবাধিকার পরিপন্থী ও নারীর ক্ষমতায়ন পরিপন্থী। এই ধরনের সুপারিশ একজন নারীর জন্য যেমন অবমাননাকর ঠিক একইভাবে একজন মুক্তিযোদ্ধার জন্যেও অপমানজনক। কেননা, একটি স্বাধীন সার্বভৌম নারী-পুরুষের সমতাপূর্ণ প্রগতিশীল সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনের জন্যই মুক্তিযোদ্ধারা তাদের জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। সংসদীয় কমিটির এ ধরনের সুপারিশ গ্রহণ জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক ।

বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে ‘নারী ইউএনও’ বলে কোন পদ নেই। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় কৃতকার্য হওয়ার মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়। সেখানে নারী-পুরুষ বিভাজন সংবিধানবিরোধী। নারীর ক্ষমতায়নকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে এই ধরনের ধর্মীয় মৌলবাদী বিভিন্ন অজুহাতকে প্রতিহত করার জন্য বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছে। একইসঙ্গে এই সুপারিশ বাতিল ঘোষণা করার জোর দাবি জানাচ্ছে।

নারীর ক্ষমতায়নকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য এবং নারীকে অবদমিত করে রাখার জন্য যে কোনও কূটকৌশলকে প্রতিহত করার জন্য দেশের নারী সমাজ ও নাগরিক সমাজের প্রতি আহবান জানাচ্ছে।