বিএডিসিতে অনিয়ম পর্ব-১৪

প্রকল্পের শতকোটি টাকা সরানো হলো অন্য হিসাবে

নানা অনিয়মে চলছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)। তা নিয়ে বাংলা ট্রিবিউন-এর ধারাবাহিক প্রতিবেদনের ১৪তম পর্ব থাকলো আজ।

বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য সরকারর জিওবি তহবিল থেকে বরাদ্দ দেওয়া শত কোটি টাকা বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করে রেখেছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)। সরকারের একটি সংস্থার তদন্তে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

এতে দেখা গেছে প্রতিষ্ঠানটির বাস্তবায়নাধীন ৪টি প্রকল্প ও ৮টি প্রতিষ্ঠান ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরের কর্মসূচিতে এ অনিয়ম ঘটেছে। এ অবস্থায় এ ঘটনাকে গুরুতর আর্থিক শৃঙ্খলা পরিপন্থী উল্লেখ করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়েছে।

প্রকল্প, প্রতিষ্ঠান ও কর্মসূচির ২০১৮-১৯ অর্থবছরের অর্থ ছাড়, ব্যাংক হিসাব, ট্রেজারি চালান নিরীক্ষা করা হয় এ অনুসন্ধানে। তাতে দেখা যায়, জিওবি বরাদ্দের অব্যয়িত প্রায় ৯৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা সরকারের নির্দিষ্ট খাতে জমা বা সমর্পণ না করে অবৈধভাবে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে জমা রাখা হয়েছে। যা আর্থিক শৃঙ্খলা পরিপন্থী।

এতে আরও দেখা যায়, ওই অর্থবছরে প্রকল্পের জিওবি বরাদ্দ হতে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প বা কর্মসূচিতে ছাড়কৃত টাকা অর্থবছরের শেষ দিন ৩০ জুন সরকারি কোষাগারে জমা না করে আলাদা ব্যাংক হিসাব খুলে জমা করা হয়েছে।

অথচ ২০০২ সালের ৮ এপ্রিল জারি করা অর্থ মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ ও উন্নয়ন অনুবিভাগের এক স্মারক মোতাবেক জিওবি বরাদ্দের অব্যয়িত সমুদয় অর্থ অর্থবছরের ৩০ জুনে সরকারের নির্দিষ্ট খাতে জমা করতে হবে। এক্ষে্ত্রে এ আদেশ পরিপালন করা হয়নি।

এ বিষয়ে নিরীক্ষা দলকে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক জবাব দিতে পারেনি। নথিপত্র পর্যালোচনা করে পরে জবাব দেওয়া হবে বলে জানান তারা। কিন্তু অনিয়ম ধরা পড়ার দুই বছর পরও জবাব পায়নি তদন্ত দল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জিওবি বরাদ্দের অব্যয়িত অর্থ ৩০ জুনের মধ্যে সরকারের নির্দিষ্ট খাতে জমা না করায় সরকারি আদেশ লঙ্ঘন হয়েছে। এ অবস্থায় এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি অব্যয়িত অর্থ উদ্ধার করে সরকারের নির্দিষ্ট খাতে জমা দিতে্ও বলা হয়েছে।

জানতে চাইলে বিএডিসি চেয়ারম্যান ড. অমিতাভ সরকার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা তথ্যগুলো পেয়েছি। কিছু কিছু বিষয় আছে যেগুলোর তাৎক্ষণিক জবাব দেওয়া যায় না। পরে আমরা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জবাব সংগ্রহ করে দিয়ে থাকি। এক্ষেত্রেও তাই করা হবে। জবাব পেলে ব্যবস্থা নেবো। সংশ্লিষ্টদের জবাব দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।’