পাঁচ লাখের গরু দুই লাখ, বিক্রেতারা এখনও হাটে

২৫ বছর ধরে গরু পালন করছেন কুষ্টিয়ার আরব আলী। একটি গরু বড় করতে তার খরচ হয় ১৭ থেকে ২০ হাজার টাকা। এবার গাবতলী হাটে এনেছিলেন ২৭টি গরু। বিক্রি করতে পেরেছেন মাত্র ৯টি। বাকিগুলো নিয়ে পড়েছেন চিন্তায়। বিক্রি হওয়ার আশায় এখনও অপেক্ষা করছেন হাটে। তিনি একা নন। আরও অনেককেই দেখা গেলো বিমর্ষ মুখে হাটে গরু ও ছাগল নিয়ে বসে থাকতে।

তবে দুশ্চিন্তার মাত্রা তাদেরই বেশি, যারা কিনা হাটে আনার আগে গরুকে ইনজেকশন দিয়েছেন বা ওষুধ খাইয়েছেন। এ ধরনের গরু গরমে দূরের যাত্রার ধকল নিতে পারে না। যাত্রাপথে মারাও যায় অনেক।

এখানে বেশিরভাগ গরুর সঙ্গে আছেন মালিকরা। বিক্রি না হলে তাকেই বহন করতে হবে পরবর্তী যাবতীয় খরচের বোঝা। অনেকে খামারির কাছ থেকে গরু কিনে এনেছেন হাটে বিক্রি করতে। তারাও পড়েছেন ঝামেলায়। গরু রাখার জায়গা পাচ্ছেন না। তাই লোকসানে হলেও আপাতত বিক্রি করতে পারলে বাঁচেন তারা।

আরব আলী ঈদের পরদিন বিক্রি করেছেন তার খামারে জন্ম নেওয়া পাকিস্তানি জাতের একটি গরু। ২ বছর ৯ মাস নিজে লালন-পালন করেছেন ওটাকে। নাম দিয়েছিলেন রবিনহুড। আশা করেছিলেন কমপক্ষে ৫ লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন। শেষ পর্যন্ত বিক্রি করতে হলো ২ লাখ ১০ হাজার টাকায়। মোহাম্মদপুরের একটি ফার্মের মালিক কিনে নিয়েছেন ‘রবিনহুড’কে।

2

আরব আলী বলেন, ‘লাভের আশায় ঢাকায় গরু আনি, কিন্তু এবার ক্ষতি হয়ে গেলো।’

২০টি ছাগল নিয়ে মানিকগঞ্জ থেকে আসেন হাসমত মিয়া। এই খামারি ঈদের আগে বিক্রি করেছেন ১৫টি ছাগল। আরও পাঁচটি নিয়ে বসে আছেন। হাসমত মিয়া বলেন, ‘এখন যা বিক্রি করবো লোকসানই হবে। কেউ ভালো দাম বলবে না।’

কেন এমন পরিস্থিতি? জবাবে গরুর ব্যাপারী জালাল মিয়া বলেন, ‘এবার ইন্ডিয়ান গরু হাটে আসবে না জেনে অনেকেই ঢাকায় গরু এনেছে বেশি লাভের আশায়। মুরগির ব্যাপারীও হাটে গরু এনেছে এবার। চাহিদার তুলনায় বেশি চলে আসাতেই এ অবস্থা।