জলবায়ু অর্থায়ন বরাদ্দে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থাকুক কেন্দ্রবিন্দুতে

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আমরা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি। এর বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় যে বাজেট বরাদ্দ করা হয় তা বর্তমান আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় খুবই অপ্রতুল। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিবাসন ও লস অ্যান্ড ড্যামেজের মত বিষয়গুলো জলবায়ু বাজেটে অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

একশনএইড বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত `স্টেকহোল্ডার কনসাল্টেশন অন বাংলাদেশ ক্লাইমেট বাজেট (২০২১-২২)’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে জলবায়ু বিশেষজ্ঞ, পরামর্শক, আলোচক, সাংবাদিক এবং স্টেকহোল্ডাররা মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) এসব কথা বলেন।

এ ওয়েবিনারে প্যানেলিস্ট হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্টের অধ্যাপক ড. মিজান আর খান, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এর ডেপুটি সেক্রেটারি ফেরদৌসি বেগম, একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির।

ওয়েবিনারে বিশেষজ্ঞরা মানবাধিকারের দৃষ্টিকোণ থেকে জলবায়ু বাজেট বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেন যেখানে জলবায়ু ব্যয়ের প্রাসঙ্গিকতা এবং কার্যকারিতা বোঝার জন্য বাস্তব চিত্র তুলে ধরেন। এসময় গত বছরের তুলনায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের জন্য জলবায়ু বাজেট বরাদ্দ কমে যাওয়ায় তাঁরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় বাংলাদেশের ২৫টি মন্ত্রণালয় এবং বিভাগের জন্য ৮ শতাংশেরও কম বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে যা ২০২১-২০২২ অর্থবছরের মোট জাতীয় বাজেটের ৫৭ দশমিক ৩৩ শতাংশ অর্থাৎ ২৫,১২৪. ৯৮ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের জন্য বাজেট বরাদ্দ হয় ৩৭৯.২১ কোটি টাকা যা গত বছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ১৯.৮৩ কোটি টাকা কম। তাছাড়া আগের বছরের তুলনায় বাজেটে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে ৪২৭.১৯ কোটি টাকা এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে ১১৩.৩২ কোটি টাকা কমেছে।

বাংলাদেশের এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রক্রিয়া শুরু হবার কারণে আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে জলবায়ু অর্থায়ন কমে যাবে বলে আশঙ্কার কথা জানান নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সাইন্স এন্ড ম্যানেজমেন্ট এর প্রফেসর ড. মিজান আর খান। তিনি বলেন, জলবায়ু অর্থায়নের ৮৫ ভাগ বরাদ্দ আসে স্থানীয় খাত থেকে, তাই স্থানীয় খাতকে গুরুত্ব দিতে হবে।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি ফেরদৌসি বেগম বলেন, যেকোনো দুর্যোগে নারী ও শিশুরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই আমাদের চেষ্টায় আছে কিভাবে নারী ও শিশুবান্ধব বাজেট প্রণয়ন করা যায়।