ভাষা সৈনিক আহমদ রফিককে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়ার আহ্বান

ভাষা সৈনিক, লেখক, বুদ্ধিজীবী আহমদ রফিককে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়ার জন্য প্রতিমন্ত্রী ও বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন ১৮ জন লেখক-কবি। মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

আহ্বান জানানো লেখক কবিরা হচ্ছেন—শোয়াইব জিবরান, ওবায়েদ আকাশ, আহমদ মোস্তফা কামাল, রাজীব নূর, শাহনাজ মুন্নী, লোপা মমতাজ, জোবাইদা নাসরিন, কবির হুমায়ূন, আলফ্রেড খোকন, শামীম রেজা, রেজা ঘটক, আফরোজা সোমা, পিয়াস মজিদ, মোজাফফর হোসেন, সাইমন জাকারিয়া, স্বকৃত নোমান, শাহেদ কায়েস ও সরকার আমিন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভাষা সৈনিক, লেখক, বুদ্ধিজীবী আহমদ রফিক অসুস্থ অবস্থায় অসহায় জীবন যাপন করছেন। তিনি আমাদের মহান মনীষী। ভাষা আন্দোলনে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ করেছেন। বাঙালির প্রতিটি আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সৃষ্টিশীল লেখা ও গবেষণা ছাড়াও তিনি জাতীয় ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা পালন করেছেন। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে তার অসামান্য অবদান রয়েছে। তিনি একাধারে কবি, কথাশিল্পী, সাহিত্য-সমাজ-রাজনীতি-বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ে বহু গ্রন্থের লেখক, তিনি রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য। পেশায় তিনি একজন ডাক্তার ছিলেন। জীবনভর দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। রবীন্দ্র চর্চাকেন্দ্র ট্রাস্ট-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন তিনি। তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশ পদক পেয়েছেন। এ ছাড়াও কলকাতার টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউট তাকে ‘রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য’ উপাধিতে ভূষিত করেছে।

এতে আরও বলা হয়, তিনি তার জমানো ২০ লাখ টাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রাস্ট করেছেন। তার সন্তানাদি নেই, একা মানুষ। এখন প্রবল আর্থিক কষ্টে পড়েছেন। খুব সম্প্রতি তার ৯৩তম জন্মদিন উপলক্ষে একটি দৈনিক পত্রিকার সাক্ষাৎকারে তিনি স্বেচ্ছায় মৃত্যুর আইন চেয়েছেন। আমরা তার এই দাবির সঙ্গে তার বর্তমান অবস্থার সম্পৃক্ততা অনুভব করে বিচলিত বোধ করছি। তিনি অত্যন্ত আত্মমর্যাদাসম্পন্ন মানুষ, কোনও অবস্থাতেই ব্যক্তি মানুষের দান-খয়রাত গ্রহণ করতে একেবারেই প্রস্তুত নন। এমতাবস্থায় রাষ্ট্রীয় জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার জন্য এই মানুষটিকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করা একান্ত প্রয়োজন। বঙ্গবন্ধু-কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরই মধ্যে অনেক লেখকের কল্যাণে এগিয়ে এসেছেন। আশা করি, আহমদ রফিককে এককালীন ৩০ লাখ টাকা অনুদান প্রদান করে তার বাকি জীবনটাকে শান্তিপূর্ণ এবং মর্যাদাপূর্ণ করে তুলবেন। আমরা প্রধানমন্ত্রীর সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করছি।