‘অর্ধযুগ ধরে’ রাস্তা ডুবে আছে ড্রেনের পানিতে

রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ইন্দিরা রোড। ব্যস্ততম এই সড়কটির একটি অংশ তলিয়ে রয়েছে ম্যানহোলের ময়লা পানিতে। বৃষ্টি হোক আর না হোক- এই সড়কে জলাবদ্ধতা ‘বারো মাসের’। জমে থাকা ময়লা পানি মাড়িয়ে আশপাশের বাসিন্দাদের চলাচল করতে হয়। ম্যানহোলের উপচে ওঠা পানি গড়িয়ে আশপাশের বাসাবাড়িতেও ঢুকে পড়ছে, ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির বেহাল দশা হলেও নজরদারি নেই কারও। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বহুবার জানানোর পরও সমস্যার সমাধান হয়নি।

সরেজমিন দেখা গেছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৭ নং ওয়ার্ডের আওতাধীন পশ্চিম রাজাবাজারের ইন্দিরা রোডের আইনমন্ত্রীর বাসভবন থেকে বিক্রমপুর ভবন পর্যন্ত অংশটি পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। সড়কের উপরিভাগ ঠিকঠাক, তবে তার ওপরেই জমে আছে ম্যানহোল দিয়ে বের হওয়া ময়লা পানি। নোংড়া ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি মারিয়েই এই এলাকার বাসিন্দাদের চলাচল করতে হচ্ছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

জানতে চাইলে স্থানীয় দোকানদার ‘সরকার লন্ড্রি’র ম্যানেজার আব্দুস সাত্তার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, গত পাঁচ থেকে সাত বছর ধরেই সড়কটিতে এমন অবস্থা বিরাজ করছে। দোকানের সামনে ময়লাপানি থাকার কারণে গ্রাহক আসছে না। তাছাড়া মাঝেমধ্যে ময়লা পানির গন্ধে দোকানে বসাও কঠিন হয়ে পড়ে। অনেকবার স্থানীয় কাউন্সিলরসহ বিভিন্ন মহলকে জানিয়েছি। কিন্তু কোনও প্রতিকার পাওয়া যায়নি।

ইসমাইল হোসেন স্থানীয় একটি বাড়ি মালিক বলেন, একসময় বৃষ্টি হলেই এই এলাকায় জলাবদ্ধতা হতো। গত ৭ থেকে ৮ বছর ধরে এর সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয়েছে ড্রেনের ময়লা পানি। যেই ড্রেন দিয়ে পানি যাবে সেই ড্রেনের পানি রাস্তায় চলে আসে। ড্রেনের কাজ করার জন্য সিটি করপোরেশনও আসেনি, ওয়াসাও আসেনি।

জলাবদ্ধতা-২

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় কাউন্সিলর ফরিদুর রহমান খান ইরান জানান, ইন্দিরা রোডের ওই অংশটি ঢাকা ওয়াসার। তাদের অন্তত ৫০ বার চিঠি দেওয়ার পরও তারা ওই ড্রেনের কোনও কাজ করেনি। ড্রেনটিও আমাদের কাছে হস্তান্তর করেনি। শুধু ওয়াসার অংশটিতেই এমন অবস্থা থাকে। তাদের ড্রেন অনেক পুরানো, অনেক চিকন। সেখানে এখন ড্রেন নেই বললেই চলে। 

তিনি আরও বলেন, ড্রেনের উপরের রাস্তা আমাদের (সিটি করপোরেশন)। আমরা রাস্তাটি অনেক পরিপাটি রেখেছি। কিন্তু ড্রেনটি ওয়াসার হওয়ায় আমরা সেখানে কোনও কাজ করতে পারি না। ওয়াসা যদি আমাদের হস্তান্তর করে দেয় তাহলে আমরা সেখানে কাজ করতে পারি।

ওয়াসা ইচ্ছা করেই ড্রেনটি সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করে না বলে অভিযোগ তোলেন এই জনপ্রতিনিধি। তিনি বলেন, কারণ এই ড্রেন দেখিয়েই তারা প্রতি বছর লাখ লাখ টাকা বিল করে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই করে না।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য একাধিকবার ফোন করলেও ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান ফোন ধরেননি। খুদে বার্তা পাঠালেও সাড়া দেননি।