উপ-রাষ্ট্রপতি ও উপ-প্রধানমন্ত্রীর পদ সৃষ্টির দাবি হিন্দু পরিষদের

জাতীয় সংসদে সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণে ৬০টি সংরক্ষিত আসন বরাদ্দ এবং একজন উপ-রাষ্ট্রপতি ও একজন উপ-প্রধানমন্ত্রীর পদ সৃষ্টির দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ। একইসঙ্গে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সার্বিক নিরাপত্তার লক্ষ্যে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের দাবি তুলেছে সংগঠনটি। শুক্রবার (২২ অক্টোবর) বিকাল থেকে পাঁচটি দাবি নিয়ে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে সড়ক অবরোধ করেন এর নেতাকর্মীরা।

কর্মসূচিতে পেশ করা সংগঠনের বাকি তিনটি দাবি হলো-শারদীয় দুর্গাপূজায় তিন দিনের সরকারি ছুটি ও নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ে সংস্কৃত শিক্ষা পুনরায় চালু করা, সরকারি চাকরিতে ২০ শতাংশ কোটা পদ্ধতি চালুসহ হিন্দু ধর্মীয় শিক্ষার্থীদের জন্য সব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে হিন্দু ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ নিশ্চিত করা এবং বেদখলকৃত সব দেবোত্তর সম্পত্তি স্ব স্ব মঠ-মন্দিরে হস্তান্তরসহ বন্ধ জাদুঘরের পরিবর্তে উদ্ধারকৃত হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিমা মঠ-মন্দিরের কাছে ফেরত দেওয়া।

শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেয় বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ। দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক হামলায় জড়িতদের বিচার এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা চেয়ে রাজধানীর শাহবাগে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দ্রুত সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ৫০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের দাবি জানান তারা। অবরোধ পরবর্তী সময়ে সন্ধ্যা ৬টার দিকে মশাল মিছিল নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাব অভিমুখে রওনা দেন আন্দোলনকারীরা।

রাজধানীর শাহবাগে সড়ক অবরোধ করে বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ

অবরোধ কর্মসূচিতে বাংলাদেশ হিন্দু আইনজীবী পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুমন কুমার রায় বলেন, ‘আপনারা জানেন দেশব্যাপী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর কী নারকীয় হামলা চালানো হয়েছে। প্রশাসন এক্ষেত্রে তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ। রাষ্ট্র সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। সাম্প্রদায়িক হামলায় জড়িতরা বারবার পার পেয়ে যাচ্ছে। এর আগেও সাম্প্রদায়িক হামলায় সংখ্যালঘুরা বিচার পায়নি। হামলার কুশীলবরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। আমরা চাই, হামলার নেপথ্যে যারা জড়িত তাদেরও যেন বিচারের আওতায় আনা হয়।’

জাতীয় হিন্দু সমাজ সংস্কার সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের মন্তব্য, ‘দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর এতো হামলা হলেও কোনও বিচার হয় না। বিচার হয় না বলে এর স্থায়ী প্রতিকার দেখা যায় না। হামলাকারীকে বের করে গ্রেফতার করা চূড়ান্ত সমাধান নয়। মূলহোতাকে গ্রেফতার করা হোক এবং শাস্তি দেওয়া হোক।’

হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতি আবারও ফিরিয়ে আনতে সরকারকে মুখ্য ভূমিকা পালনের আহ্বান জানায় জাতীয় হিন্দু সমাজ সংস্কার সমিতি।