মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক মন্ত্রণালয় ঘেরাও

১৯৭৭ সালে গুম-খুন, কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ও চাকরিচ্যুত সেনা ও নৌ বাহিনীর সদস্যদের তালিকা প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা। সোমাবার (৮ নভেম্বর) মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক মন্ত্রণালয় ঘেরাও করে তারা এ দাবি জানান।

ঘেরাও কর্মসূচিতে তাদের সন্তানরা বলেন, ‘আমাদের পিতারা ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর ঢাকায় জাপানি বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনায় তৎকালীন স্বৈরশাসক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান পরিকল্পিতভাবে একটি অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট তৈরি করেন। পরে তথাকথিত বিদ্রোহ দমনের নামে একদিনের সামরিক আদালতে বিচার করে সেই রাতেই ফাঁসি সম্পন্ন করেন ঢাকা, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, রংপুর, যশোর ও বগুড়া কেন্দ্রীয় কারাগারে।’

তারা অভিযোগ করেন, ‘রাতের আঁধারে কারফিউ দিয়ে ফাঁসি কার্যকর করা হতো। কোনও প্রকার ধর্মীয় সৎকার ছাড়াই লাশগুলো ঢাকার আজিমপুর কবরস্থান, কুমিল্লার টিক্কারচর কবরস্থানে মাটিচাপা দেওয়া হতো। সেনাশাসক জেনারেল জিয়াউর রহমানের নির্দেশে গঠিত বিশেষ সামরিক ট্রাইবুনালের কথিত বিচারে ফাঁসি হওয়া ১৯৩ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়। কিন্তু ওই ঘটনার জেরে মৃতের সংখ্যা ছিল এক হাজার ১৪৩ জন এবং কারাদণ্ড ভোগ করেছিলেন সেনা ও বিমান বাহিনীর আড়াই হাজার সদস্য।’

তারা আরও বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তড়িঘড়ি করে ফাঁসি দেওয়ার আগে আত্মপক্ষ সমর্থন কিংবা আইনজীবী নিয়োগের কোনও সুযোগ দেওয়া হয়নি। অথচ এই মানুষগুলোকে ন্যায়বিচারের অধিকার ছিল। ১৯৭৭ সালের অক্টোবর মাসে দীর্ঘদিন পরিবারগুলোর কাছে এই তথ্য অজানা ছিল। আমরা জানি না কোথায় তাদের কবর।’

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্য মো. কামরুজ্জামান মিঞা বলেন, ‘খুন-গুম হওয়া অনেকেই মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তাই মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের দ্বায়িত্ব তাদের তালিকা প্রকাশ করা। যদি ১ ডিসেম্বরের মধ্যে এই তালিকা প্রকাশ করা না হয়, তাহলে আগামীতে আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাবো। প্রয়োজনে লাগাতার ৭ দিন অবরোধ কর্মসূচি দেবো।’