দাবি না মানলে মহাসমাবেশ করবে সরকারি চাকরিজীবী ফোরাম

নবম পে-কমিশন গঠন করে ‘বেতন বৈষম্য’ দূরীকরণসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে সরকারি চাকরিজীবী জাতীয় ফোরাম। দাবি আদায় না হলে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা।

শনিবার (১১ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনী মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সংগঠনের নেতারা এ ঘোষণা দেন।

সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শেখ ফরিদ আহমেদ বলেন, আমরা ১১ থেকে ২০ গ্রেডের এই বঞ্চিত লাখ লাখ কর্মচারীর দাবি বাস্তবায়নে দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন করে আসছি। এসব দাবি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণে আমরা বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করে আসছি। গত ১৬ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর সাথে সরাসরি সাক্ষাতের জন্য আবেদন করেছি, অতপর ১০ অক্টোবর দাবি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণে সংবাদ সম্মেলন ও ২৪ অক্টোবর ৬৪ জেলায় একযোগে জেলা প্রশাকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।

তিনি আরও বলেন, জীবিকার তাগিদে দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতি মোকাবিলায় আমাদের যৌক্তিক দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আজকের আলোচনা সভার মাধ্যমে আবারও আমাদের দাবিগুলো মেনে নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি।

দাবি মানা না হলে আগামী ফেব্রুয়ারিতে দাবি আদায়ে মহাসমাবেশের ঘোষণা দেন শেখ ফরিদ আহমেদ।

সংগঠনের দেওয়া পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, দ্রুত নবম পে-কমিশন গঠন করে চলমান বেতন বৈষম্য দূরীকরণের মাধ্যমে নবম পে-স্কেল ঘোষণা ও বর্তমান বাজার ব্যবস্থা অনুযায়ী পে-স্কেল প্রদানের পূর্ব পর্যন্ত সর্বনিম্ন ৪০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা প্রদান এবং নবম পে-স্কেল বাস্তবায়ন কমিটিতে ১১-২০ মেড এর কর্মচারী প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহালসহ বিভিন্ন দফতরে বর্তমানে প্রচলিত অসংগতিপূর্ণ নিয়োগবিধি পরিবর্তন করে শিক্ষাগত যোগ্যতা উন্নীতকরণসহ এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রণয়ন করতে হবে।

বুকপোস্ট প্রথা বিলুপ্ত করে সকল পদে সমহারে পদোন্নতি প্রদান, আউটসোর্সিং প্রথা বাতিলসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে ৫ বছর এর অধিক সময় ধরে পরিচালিত বা চলমান বিভিন্ন প্রকল্পে কর্মরত কর্মচারীদের স্থায়ী বা রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত করারও দাবি করে সংগঠনটি। আর দফতর, অধিদফতর, পরিদফতর, স্বায়ত্ত্বসাশিত প্রতিষ্ঠান ও করপোরেশনে কর্মরত কর্মচারীদের সচিবালয়ের ন্যায় পদ-পদবী ও মোড প্রদান করতে হবে এবং সকল ভাতা বর্তমান বাজার চাহিদা অনুযায়ী পুনর্নির্ধারণসহ ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত সকলকে ঝুকি ভাতা প্রদান, টেকনিক্যাল কাজে নিয়োজিত সকলকে টেকনিক্যাল স্কেল প্রদান, অতিরিক্ত কাজের জন্য অভারটাইম ভাতা প্রদানসহ ১০০ শতাংশ পেনশন সমার্পণ এবং বাংলাদেশ রেলওয়েতে প্রচলিত প্রহসনের ৫০ টাকা রেশনভাতা বাতিল করে ১১-২০ গ্রেডের সকল কর্মচারীকে বর্তমান বাজার ব্যবস্থা অনুযায়ী রেশন প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে। 

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের কার্যকরী সভাপতি মো. জিয়াউর রহমান, সিনিয়র সহ-সভাপতি মনির হোসেন, সহ-সভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম জাফর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খান আতাউর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারহানা পারভিন, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, দফতর সম্পাদক ইমাম হোসেন, আইন বিষয়ক সম্পাদক মো. সোহেল, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক রুনুর জাহান, ঢাকা মহানগর এর আহ্বায়ক মনোয়ার হসেন কবির, সদস্য সচিব এবনে ফারু সহ ঢাকা মহানগর, বিভাগ, জেলা পর্যায়ের আহ্বায়ক, সদস্য সচিব সহ ১১-২০ গ্রেডের সাধারণ কর্মচারী ও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা।