সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট ছাড়া গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয় না: বিচারপতি আবদুর রউফ

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ মনে করেন, সুষ্ঠু ও নিরেপেক্ষ ভোট ছাড়া গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয় না। তিনি বলেন, ‘ভোটার ও নির্বাচন কমিশনের মধ্যে তৃতীয় কোনও হাত থাকলে কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া সম্ভব নয়। যতদিন এই দুইয়ের মধ্যে তৃতীয় হাত থাকবে ততদিন এদেশে সুষ্ঠু ভোট হবে না।’ বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদের ৮৯তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন। 

বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্র ছাড়া কোনও সুযোগ নেই। তবে তাত্ত্বিক কোনও গণতন্ত্র নয়, প্র্যাক্টিক্যাল গণতন্ত্র বাস্তবায়ন করতে হবে। আজ যে গণতন্ত্র স্কুল-কলেজে পড়ানো হচ্ছে তা নিয়ে নতুনভাবে চিন্তা করতে হবে। জনগণের কথা বলা হলেও কোনও ক্ষেত্রেই জনগণকে মূল্যায়ন করা হয় না।’

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পরামর্শ, নির্বাচন পদ্ধতির পরিবর্তন হওয়া দরকার। তার কথায়, ‘মানুষ দলকে ভোট দেবে, কোনও প্রার্থীকে নয়। প্রার্থী নির্বাচন করা হবে দলীয় অভ্যন্তরীণ নির্বাচনের মাধ্যমে। এরকম হলে দেশে চলমান যে নির্বাচনি সহিংসতা তা বন্ধ হতে পারে।’

এমাজউদ্দীন আহমদ রিসার্চ সেন্টার আয়োজিত সেমিনারে নিবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী। এতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশকে এখন আর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলা যায় না। এখন আর নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধি ও সরকার গঠন করা হয় না। বর্তমানে গণতন্ত্রের পরিবর্তে একনায়কতন্ত্রের উন্মেষ ঘটেছে। এর বিরুদ্ধে যে স্বল্পসংখ্যক বুদ্ধিজীবী সোচ্চার হয়েছিলেন তাদের মধ্যে অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ ছিলেন অন্যতম।’ 

নিবন্ধে আরও রয়েছে, ‘বর্তমানে বুদ্ধিজীবীদের একটি বড় অংশ শাসক শ্রেণির স্বার্থ হাসিল করে চলছে। পদ-পদবীর জন্য তারা ক্ষমতাবান ও শক্তিধরকে খুশি রাখতে সর্বশক্তি নিয়োগ করে। এ অবস্থায়ও কিছুসংখ্যক বুদ্ধিজীবী তাদের আদর্শে অবিচল থাকে। এমাজউদ্দীন আহমদ ছিলেন তাদেরই একজন।’

সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন কবি আবদুল হাই শিকদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দলের আহ্বায়ক ড. লুৎফর রহমান, এমাজউদ্দীন আহমদের কন্যা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন।