করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকার ইতোমধ্যে ১১ দফা নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এতে বলা হয়েছে, জনসাধারণকে অবশ্যই বাইরে গেলে মাস্ক পরতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন নিশ্চিতে সারাদেশে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। রেস্তোরাঁয় বসে খাবার গ্রহণ ও আবাসিক হোটেলে থাকার জন্য অবশ্যই টিকা সনদ দেখাতে হবে। ১৩ জানুয়ারি থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই ১১ দফা মেনে চলতে হবে।
তবে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইমরান হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, দেশের রেস্তোরাঁ ব্যবসাকে ধ্বংস করতে সরকার এই হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ অবাস্তব সিদ্ধান্ত, এর সঙ্গে বাস্তবতার কোনও সংযোগ নেই।
আর সরকারি এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) সমিতির জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখান থেকে সরকারের কাছে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার বিষয়ে আবেদন জানানো হবে।
ইমরান হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন কোনওভাবেই সম্ভব না। এটা সম্পূর্ণভাবে একটা অবাস্তব সিদ্ধান্ত। এর সঙ্গে বাস্তবতার কোনও সংযোগ নেই।
ইমরান হাসান বলেন, গত কয়েকদিন আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক যখন কথা বলেছেন, তখন থেকেই টের পাচ্ছিলাম এ ধরণের প্রজ্ঞাপন আসতে পারে। তখন থেকেই বলে এসেছি এ সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।
সরকার চাপিয়ে দিলে দেশের নাগরিক হিসেবে সেটা আমাকে মানতে হবে এবং এর কোনও বিকল্প নেই তিনি বলেন, সারাদেশে তো এখনও মাস্ক পরাটাই এনশিওর করতে পারিনি। সেখানে টিকার সনদ নিয়ে কাস্টমারকে অ্যালাউ করা কী করে সম্ভব?
দেশের রেস্তোরাঁগুলোতে যারা কাজ করেন তাদের বেশিরভাগই টিকার বাইরে রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নাই, তারা জন্ম নিবন্ধন দিয়েও টিকা নিতে পারছে না। কারণ এখানে যারা কাজ করেন, অনেকের বয়স ১৭ বছরের কম। সরকারের কাছে বহুবার আবেদন করা হয়েছে, আমাদের ফ্রন্টলাইনার স্বীকৃতি দিয়ে টিকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক। যেটা অন্য ফ্রন্টলাইনারদের বেলায় করা হচ্ছে। সেটাও সরকার আজ পর্যন্ত করেনি।
ইমরান হাসান বলেন, আমরা মনে করছি তৃতীয় আরেকটি পক্ষকে সুযোগ করে দেওয়ার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তৃতীয়পক্ষ বলতে কাদেরকে বোঝাতে চাচ্ছেন প্রশ্নে তিনি বলেন, যারা ফুড ডেলিভারির নামে নৈরাজ্য চালাচ্ছে, অনলাইনে ডেলিভারি করছে তাদের বোঝাচ্ছি।
মঙ্গলবার এ বিষয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, সবাই বসে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমরা চেষ্টা করবো, আবেদন করবো-যেন সরকার এই হঠকারী সিদ্ধান্ত থেকে বেরিয়ে আসে।