মাদক কারবারির তথ্য দেওয়ায় পুলিশের সোর্স খুন, গ্রেফতার পাঁচ

মাদক কারবারিদের তথ্য দিয়ে গ্রেফতার করিয়ে দেওয়ায় কেরানীগঞ্জের পুলিশের সোর্স নুরে আলম সায়মনকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে র‌্যাব। সোমবার (১৭ জানুয়ারি) বিকালে কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে বাহিনীর মুখপাত্র খন্দকার আল মঈন এই তথ্য জানান।

তিনি বলেন, কিছুদিন আগে সায়মনের তথ্যে কয়েকজন মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গ্রেফতারকৃতরা কেরানীগঞ্জের গ্লাস কোম্পানি নামে একটি সন্ত্রাসী ও মাদক সিন্ডিকেটের সদস্য।

ওই গ্রুপের প্রধান হোতা সুমন ওরফে গ্লাস সুমন। তার দলের লোকজন গ্রেফতার হওয়ায় সায়মনের ওপর ক্ষিপ্ত হয় সে। যে কারণে ১৫ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জের মুক্তিরবাগ এলাকায় ডেকে নিয়ে সায়মনকে নৃশংসভাবে খুন করে সে ও তার দলবল।

হত্যাকাণ্ডে গ্লাস সুমন ছাড়াও তার সহযোগী সোহাগ ওরফে লম্বু সোহাগ (২৮), শরীফ ওরফে গরীব শরীফ (২৯), জনি ওরফে হর্স পাওয়ার জনি (৩২) ও হারুন (৩২) অংশ নেয়।

নিহত সায়মনের গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরের গোসাইরহাট। এই ঘটনায় নিহতের ভাই মো. আরস আলম ঢাকা কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় ৭/৮ জন অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মো. সুমন ওরফে গ্লাস সুমন

রবিবার (১৬ জানুয়ারি) রাতে কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা সুমনসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-১০।

তাদের কাছ থেকে বেশ কিছু ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছে।

সায়মনের হাত ও পায়ের রগ কাটাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখম করা হয়। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে সুমনের নেতৃত্বে এই হত্যাকাণ্ড চালানো হয় বলে জানায় র‌্যাব। পরে স্থানীয় জনগণ সায়মনকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

গ্রেফতারকৃত মো. সুমন নিজে ভিকটিমের রগ কাটে বলে র‌্যাব সূত্রে জানা যায়।

এ ছাড়া লম্বু সোহাগ ও শরীফ রগ কাটায় অংশ নেয় এবং ওই সময় জনি ও গ্লাস সুমন সায়মনকে ধরে রাখে।

গ্রেফতারকৃত সুমনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মাদক ও ছিনতাইয়ের ৫টি মামলা রয়েছে। সে একটি গ্লাসের দোকানে কাজ করতো এবং ভাঙা গ্লাস দিয়ে মানুষকে বিভিন্ন সময়ে আক্রমণ ও জখম করার কারণে সে এলাকায় গ্লাস সুমন হিসেবে পরিচিতি পায়।

এ ছাড়া গ্রেফতারকৃত সোহাগ, জনি ও হারুনের বিরুদ্ধেও রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।