ছিনতাই করে তার ভিডিও প্রচার করে ‘লও ঠেলা’ গ্রুপের সদস্যরা

রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার বেরিবাধ সংলগ্ন বিভিন্ন সড়কে ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত একটি গ্রুপ। ছিনতাইয়ের সেই দৃশ্য ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারও করে তারা। এমন চক্রটির মূলহোতাসহ ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-২। বুধবার (১৯ জানুয়ারি) মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। 

গ্রেফতাররা হলেন- ‘লও ঠেলা’ নামে একটি কিশোর গ্যাং গ্রুপের প্রধান বাবু ওরফে দশের বাবু (২৬), তার সহযোগী ফোরকান (২২), পলাশ (২৩), সুমন (২২), সাগর (২৩), রাজন (২৩), নাজিম (২৪), শাকিল (২০) ও মিলন (২১)।

গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে ছুরি, চাপাতি ও স্টিলের পাইপসহ দেশিয় ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার (১৯ জানুয়ারি) র‌্যাব-২ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আবু নাঈম মো. তালাত বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি জানান, গত ৩১ ডিসেম্বর রাতে মোহাম্মদপুরের নবীনগর হাউজিং এলাকায় একদল সন্ত্রাসী দোকানপাট, বাড়িঘর ভাঙচুর করে এবং ছিনতাই করে। গত ১৬ জানুয়ারি আবারো নবীনগর হাউজিং এলাকায় মারামারি, ভাঙচুর, ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া যায়।

এমন অভিযোগের ভিত্তিতে মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে 'লও ঠেলা' গ্রুপের ৯ সদস্যকে আটক করা হয়। এই দলের মূলহোতা বাবু ওরফে দশের বাবু। তারা দীর্ঘদিন ধরে মোহাম্মদপুরসহ বিভিন্ন স্থানে ডাকাতি, সন্ত্রাসী কার্যক্রম, মাদক কেনাবেচা, ছিনতাই ও চাঁদাবাজি কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। দশের বাবু ২০০০ সালে মায়ের সঙ্গে নড়াইল থেকে ঢাকায় আসে। পরে তিনি গাড়ির হেলপার, হোটেলের পরিচ্ছন্ন কর্মীর চাকরিসহ বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত ছিল। এক পর্যায়ে তিনি মাদকাসক্ত হয়ে মাদকের টাকার জন্য ছোট ছোট চুরি-ছিনতাই শুরু করে।

লে. কর্নেল আবু নাঈম তালাত আরও জানান, ২০১৪ সালে কিশোর গ্যাং ‘ভাইব্বা ল কিং’-এ যোগ দেওয়ার পর বাবুর অপরাধের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। এক সময় তার কুখ্যাতি চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে অপরাধ জগতে সে দশের বাবু নামে খেতাব পায়। পরবর্তী সময়ে ‘ভাইব্বা ল কিং’ গ্রুপ থেকে আলাদা হয়ে ২০১৭ সাল থেকে 'লও ঠেলা' নামে নিজস্ব গ্রুপ গড়ে তোলে বাবু। আটক বাবু বখে যাওয়া ছেলেদের তার গ্রুপে নিতো। ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধে সম্পৃক্ত তার এই গ্রুপ। এছাড়া জবর দখল, ভাড়ায় শক্তি প্রদর্শন এবং আধিপত্য বিস্তারসহ নানা অপকর্মে তাদের ব্যবহার করেন বাবু। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় অস্ত্র, ডাকাতি, দস্যুতা, মাদক ও ছিনতাইসহ মোট ছয়টি মামলা রয়েছে।

আটক অন্যরা সবাই ক্ষুদ্র ব্যবসা, অটোচালক, রিকশাচালক, গাড়িচালক, দিন মজুরসহ বিভিন্ন পেশার আড়ালে অপরাধমূলক কার্যক্রমে জড়িত বলে জানান এই র‌্যাব কর্মকর্তা। তিনি বলেন, আটক ফোরকানের নামে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি, পলাশের নামে হত্যা চেষ্টা আইনে একটি ও শাকিলের নামে একটি মাদক মামলা রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান র‌্যাব-২ এর অধিনায়ক।