খুন-নারী নির্যাতনের মতো অপরাধ কমেছে

খুন, নারী নির্যাতন, অপহরণের মতো ঘটনা আগের চেয়ে কমেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দফতর। ২০১৯ সাল থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট তিন বছরের পরিসংখ্যানে এসব তথ্য জানা গেছে।

পুলিশ সদর দফতরের এআইজি মিডিয়া মো. কামরুজ্জামান বলেন, ২০২০ সালের এপ্রিলে বর্তমান আইজিপি ড. বেনজির আহমেদ দায়িত্ব গ্রহণ করার পরপরই বিট পুলিশিং প্রবর্তন করেন। এরপরই বাংলাদেশ বড় ধরনের অপরাধের প্রবণতা লক্ষণীয়ভাবে কমে গেছে।

পুলিশ সদর দফতরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে দেশে মোট ১ লাখ ৯৭ হাজার ৫১০টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে উদ্ধারজনিত মামলার সংখ্যা বেশি। এই সময়ে কমেছে বড় অপরাধের মামলা।

পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বড় ধরনের অপরাধ বিশেষ করে খুন, নারী নির্যাতন, অপহরণের মতো অপরাধ কমেছে। ২০১৯ সালে দেশে মোট ৩ হাজার ৬৫৩টি খুনের মামলা হয়। ২০২০ সালে এ সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৫৩৯। অন্যদিকে, ২০২১ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২১৪।

২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে খুনের মামলা ৩.২২ শতাংশ এবং ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে ১০.১১ শতাংশ কমেছে।

নারী নির্যাতন মামলার ক্ষেত্রে দেখা যায়, ২০১৯ সালে নারী নির্যাতন সংক্রান্ত ঘটনায় ১৩ হাজার ৫১৭টি মামলা হয়। ২০২০ সালে সংক্রান্ত মামলা হয় ১৩ হাজার ৪৩১টি এবং ২০২১ সালে হয় ১২ হাজার ৮৫৫ টি। অর্থাৎ, তুলনামূলক হিসেবে ২০২০ সালে ০.৫৪ শতাংশ এবং ২০২১ সালে ৪.৪৯ শতাংশ নারী নির্যাতন মামলা কমেছে।

অপহরণ মামলার ক্ষেত্রে দেখা যায়, ২০১৯ সালে দেশে ৫৯৮টি এবং ২০২০ ও ২০২১ সালে যথাক্রমে ৪৮৬ ও ৪৪৫টি মামলা হয়েছে। অর্থাৎ, ২০২০ সালে ২৩.০৪ শতাংশ এবং ২০২১ সালে ৯.২১ শতাংশ অপহরণ মামলা কমেছে।

পুলিশ সদর দফতর আরও জানায়, ২০১৯ সালে দেশে মোট ২ লাখ ২৫ হাজার ৬৮৪টি মামলা হয়। ২০২০ সালে মামলার সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ১ লাখ ৮৭ হাজার ৯২৬। অর্থাৎ এক বছরে ৩৭ হাজার ৭৫৮টি মামলা (১৬.৭ শতাংশ) কমে যায়।

২০২১ সালে অবৈধ অস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্য ও মাদক উদ্ধারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বিশেষ অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময়ে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার এবং মাদক দ্রব্য উদ্ধার সংক্রান্ত মামলার সংখ্যা বেশি হওয়ায় তা সামগ্রিকভাবে মোট মামলার সংখ্যার ওপর প্রভাব ফেলে।

বড় ধরনের এসব মামলা কমে যাওয়া এবং বিশেষ অভিযানের মাধ্যমে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারে পুলিশের এ তৎপরতাকে সামগ্রিকভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য ইতিবাচক মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

অপরাধ দমনে ভূমিকা রাখছে বিট পুলিশিং

৬ হাজার ৯১২টি বিটে ভাগ করে দেশব্যাপী একযোগে বিট পুলিশিং প্রবর্তন করা হয়। মানুষের দোরগোড়ায় সরকারি সেবাকে নিয়ে যাওয়া বর্তমান সরকারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গীকারের ধারাবাহিকতায় এই উদ্যোগ নেই বাংলাদেশ পুলিশ।

এআইজি মো. কামরুজ্জামান বলেন, বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে থানার বিদ্যমান সেবাকে ইউনিয়ন পর্যন্ত এবং পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের ক্ষেত্রে ওয়ার্ড পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে। প্রো-অ্যাকটিভ পুলিশিং নিশ্চিত করতে চালু হওয়া বিট পুলিশিং প্রত্যক্ষভাবে কার্যকর ভূমিকা রেখে চলেছে।

তিনি বলেন, ২০২০ সালের এপ্রিলে আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ দায়িত্ব গ্রহণ করার পরপরই বিট পুলিশিং প্রবর্তন করেন।