শাবি ভিসির পদত্যাগ চেয়ে শিক্ষকদের অনলাইন ক্যাম্পেইন

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) চলমান আন্দোলনের মধ্যে উপাচার্য প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পাশে দাঁড়িয়েছেন দেশের ৩৪টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৪ জন উপাচার্য। এমনকি সম্প্রতি এক ভার্চুয়াল বৈঠকে শাবিপ্রবির ভিসিকে পদত্যাগে বাধ্য করা হলে প্রয়োজন সবাই একসঙ্গে পদত্যাগের পক্ষেও মত দেন। তবে এই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পাশেও দাঁড়িয়েছেন অনেক শিক্ষক। এরই মধ্যে শিক্ষকদের বেশ কয়েকটি সংগঠন শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে বিবৃতিও দিয়েছে। আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এককভাবেও অনেক শিক্ষক শাবি উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে ক্যাম্পেইন শুরু করেছেন।

মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) ফেসবুক স্ক্রল করে দেখা যায়, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে ভিসি প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবি জানানো শিক্ষকদের অধিকাংশই ‘শিক্ষক নেটওয়ার্ক’ এর সঙ্গে যুক্ত। এই সংগঠনে যুক্ত দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭ জন শিক্ষক গত মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় বিবৃতি দেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সামিনা লুৎফা গণমাধ্যমে এ বিবৃতিটি পাঠান। শিক্ষক নেটওয়ার্কের বিবৃতিতে বলা হয়, শাবিপ্রবিতে যা ঘটেছে, তার নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের নেই। পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে কেবল যে ভিসি ব্যর্থ হয়েছেন, তাই নয়, বরং শিক্ষার্থীদের ওপরে হামলার নির্দেশ দিয়ে ফৌজদারি অপরাধ করেছেন তিনি। আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে ভিসির পদত্যাগ চাই। শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করার নিন্দাও জানিয়েছে শিক্ষক নেটওয়ার্ক।

শাবিপ্রবি-২

এ ঘটনারই পরিপ্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন বক্তব্য সংবলিত কাগজ, প্ল্যাকার্ড হাতে ধরে ছবি পোস্ট করছেন শিক্ষকরা। 

বর্তমানে প্রবাসী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ফাহমিদুল হক কাগজে লিখেছেন, ‘শিক্ষার্থীদের প্রাণের বিনিময়ে উপাচার্যের গদি রক্ষা নয়। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি মেনে নিন।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রুশাদ ফরিদি ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখছেন, ‘… যেরকমই হোক একসময় তো শিক্ষক ছিলেন, সেই দাবি নিয়ে বলছি, স্যার, যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা আপনার পদত্যাগের দাবিতে দিনের পর দিন না খেয়ে শীতের কনকনে ঠাণ্ডায় কাঁপতে-কাঁপতে, ধুঁকে-ধুঁকে মরছে, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন মুখে আপনি এখনও আছেন?  আপনি ওদের সবচেয়ে বড় অভিভাবক। সেই অভিভাবক হয়ে আপনি ওদের উপর পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে নির্যাতন করলেন, সাউন্ড গ্রেনেড মারলেন? ক্ষমতা আর প্রতিপত্তির অন্ধ মোহ থেকে বের হয়ে আসুন। পদত্যাগ করে ফেলুন আজকেই আর এই ছেলেমেয়েগুলোর প্রাণ বাঁচান।’

কেউ কেউ আবার এ ধরনের ছবিও পোস্ট করেছেন

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মির্জা তসলিমা সুলতানা (লুনা) লিখেছেন, শিক্ষার্থীদের উপর দুই দফা হামলা করে শাবিপ্রবি’র ভিসি দায়িত্বে থাকার সকল যোগ্যতা হারিয়েছেন। অংশীজন শিক্ষার্থীরা চায় না, পদত্যাগ করুন এখনই।’