নারায়ণগঞ্জ-গাজীপুরের ডিসিসহ ৮ জনকে আদালত অবমাননার নোটিশ

পূর্বাচলের পাশে বিভিন্ন এলাকায় একাধিক হাউজিং কোম্পানি কর্তৃক জলাধার, খাল, বিল বা নিচু জায়গায় মাটি ভরাট ও দখলের উপর হাইকোর্টের দেওয়া স্থিতিবস্থা অমান্য করার অভিযোগ এনে আদালত অবমাননার নোটিশ পাঠানো হয়েছে। মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে সংগঠনটির সভাপতি সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ এই নোটিশ পাঠিয়েছেন।

নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মনজুরুল হাফিজ ও পুলিশ সুপার মো. জায়েদুল আলম; গাজীপুরের ডিসি আনিসুর রহমান ও পুলিশ সুপার এস এম সফিউল্লাহড়; নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ইউএনও শাহ নুসরাত জাহান ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান খান এবং গাজীপুরের কালিগঞ্জের ইউএনও সাদিকুজ্জামান ও ওসি মাহফুজুর রহমান মিয়াকে এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

রবিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ নিজেই এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, নোটিশে হাইকোর্টের দেওয়া ২০১৮ সালের ১২ নভেম্বর এবং ২০১৯ সালের ২৭ জানুয়ারির আদেশ অনুসারে স্থিতিবস্থার আদেশ নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা গ্রহণের আনুরোধ জানানো হয়েছে।

নোটিশে বলা হয়েছে, পূর্বাচলের পাশে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ ও গাজীপুর জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ‘পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৫’ ও ‘জলাধার সংরক্ষণ আইন-২০০০‘ এর বিধান লংঘন করে একাধিক হাউজিং কোম্পানি কর্তৃক জলাধার, খাল, বিল, নিচু জমির মাটি ভরাট ও সকল অবৈধ দখল ও সাইন বোর্ড গড়ে ওঠে। পরে সেসব অপসারণ করার নির্দেশনা চেয়ে জনস্বার্থে এইচআরপিবি আদালতে রিট মামলা দায়ের করে। সে রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ওইসব এলাকায় স্থিতিবস্থা বজায় রাখার আদেশ প্রদান করেন।

জনস্বার্থ বিবেচনা করে হাইকোর্ট ২০১৮ সালের ১২ নভেম্বর এবং ২০১৯ সালের ২৭ জানুয়ারি বিবাদীদের অবৈধ দখল ও মাটি ভরাটের উপর স্থিতিবস্থা বজায়ের নির্দেশ দিলেও তা পালিত হচ্ছে না বলে অভিযোগ করা হয়েছে নোটিশে। বলা হয়েছে, অনেক জায়গায় মাটি ভরাটের কাজ অব্যাহত রয়েছে। কয়েকদিন আগে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) প্রতিনিধিরা এই এলাকা পর্যবেক্ষণে গিয়ে অনেক হাউজিং কোম্পানির অবৈধ দখল ও মাটি ভরাট দেখতে পান। যদিও এর আগে আদেশ হওয়ার পরে আদালতে বিবাদীরা পদক্ষেপ নিয়ে এভিডেভিট দাখিল করেছিল। বর্তমানে পূর্বাচলের উক্ত এলাকায় মাটি ভরাট করে পরিবেশের ক্ষতি করা হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে না, যা আদালত অবমাননার সামিল।

এই নোটিশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে আদালতের নির্দেশ অনুসারে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে। তা না করা হলে এ বিষয়ে আদালত অবমাননার মামলা করা হবে বলেও নোটিশে জানানো হয়েছে।