সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা, গ্রেফতার ৩

সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ- বিজিবিতে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া প্রতারক চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। গ্রেফতারকৃতরা হলো— শামসুজ্জোহা ওরফে জুয়েল (৪০), শামীম হাসান তালুকদার (৩৮) ও আলমগীর হোসেন (৪০)।

বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে সেনাবাহিনীর একটি ভুয়া পরিচয়পত্র, ২টি বিজিবি’র ভুয়া পরিচয়পত্র, ৩টি ভুয়া  নিয়োগপত্র, ১৬ পাতা ব্যাংক স্টেটমেন্ট, একটি ব্যাংক চেক ও প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৬টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

র‌্যাব কর্মকর্তারা জানান, গ্রেফতারকৃত শামসুজ্জোহা দীর্ঘদিন ধরে চাকরি প্রত্যাশী ও তাদের পরিবারের সঙ্গে কৌশলে পরিচিত হয়ে নিজের পরিচিত সেনা কর্মকর্তার মাধ্যমে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নিশ্চয়তা দেয়। প্রত্যেক চাকরি প্রত্যাশীর কাছ থেকে ৫-৭ লাখ টাকা নিয়ে তাদের মেডিক্যাল চেকআপ করার কথা বলে সেনানিবাস এলাকার পাশে নিয়ে যায়। সেখানে আলমগীর ও শামীম নামে দুজনকে সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলে চাকরি প্রত্যাশীদেরকে তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করানো হয়। পরে চাকরি প্রত্যাশীদের একটি ভুয়া নিয়োগপত্র ধরিয়ে দিয়ে চুপচাপ বাড়ি চলে যেতে বলে। পরে তারা নিজেদের মোবাইল ফোন বন্ধ করে পালিয়ে বেড়ায়।

র‌্যাব কর্মকর্তারা জানান, গ্রেফতারকৃত শামসুজ্জোহা ওরফে জুয়েল এই চক্রের মূল হোতা। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় অস্ত্র আইন, নারী নির্যাতন, প্রতারণা ও মাদকসহ মোট আটটি মামলা রয়েছে। সে বর্তমানে ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি। ২০১৫ সালের দিকে চক্রের অপর দুই সদস্যের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। প্রতারক আলমগীর ও প্রতারক শামীম দুই জনই কম্পিউটার প্রিন্ট, ফটোকপি, অনলাইন জব অ্যাপ্লিকেশনের দোকানের মালিক। তাদের দোকানে অনলাইনে চাকরির জন্য আবেদন করতে আসা ব্যক্তিদের মাধ্যমেই তারা বিভিন্ন বাহিনী বা সরকারি চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির তথ্য সংগ্রহ করতো। সেখান  থেকে সহজ সরল চাকরি প্রার্থীদের তারা টার্গেট করতো। শামসুজ্জোহা নিজেকে বিজিবি'র সদস্য (হাবিলদার, মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট) হিসেবে ভুয়া পরিচয় দিতো।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত শামীম জানিয়েছে, তারা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক দলের সক্রিয় সদস্য। তারা মূলত সেনাবাহিনীর বেসামরিক কর্মচারী নিয়োগ, বিশেষ করে অফিস করণিক, বাবুর্চি, মেসওয়েটার, স্টোরম্যান ইত্যাদি পদে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল।