বৃহস্পতিবার কিছুটা ফাঁকা ছিল বইমেলা

নানা আশঙ্কা কাটিয়ে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়েছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০২২। প্রথমদিন থেকেই জমে উঠেছে মেলা। দর্শক-পাঠক-লেখক-প্রকাশক-বিক্রয়কর্মীদের পদচারণায় প্রথম দিন থেকেই বিপুল মানুষের পদচারণায় মুখরিত ছিল বইমেলা। তবে ১৭তম দিনে বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) মেলা ছিল অনেকটা ফাঁকা।

প্রকাশক ও বিক্রয়কর্মীরা বলছেন, বইমেলার সময় বাড়ায় লোকসমাগম কমে গেছে। সবাই ভাবছে, আরও সময় আছে শেষদিকে সময় করে যাবো। তারা আরও জানান, মেলার সময় বাড়ায় লোকসমাগমের সঙ্গে সঙ্গে বিক্রিও কিছুটা কমেছে। প্রথমা প্রকাশের স্টল ম্যানেজার জাকির হোসেন বলেন, ‘এবারের বইমেলায় সবচেয়ে কম দর্শনার্থী আজ। এবারের বইমেলা প্রথমদিন থেকে জমে উঠেছে। মেলার সময় বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে বিক্রি আগের তুলনায় একটু কম হচ্ছে। সময় বাড়ানোর কারণে হয়তো পাঠকরা মনে করছেন, সময় তো আরও আছে, আমরা শেষ দিকে যাবো।’

প্রকাশনা সংস্থা সাহিত্য প্রকাশের ব্যবস্থাপক রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘আজকে মেলায় ক্রেতার উপস্থিতি হতাশাজনক। প্রথমে মেলা তেরো দিনের জন্য শুরু হওয়ায় মানুষ সেই কারণে প্রথমদিকে বেশি এসেছে। এখন আবার সময় বাড়ানোর কারণে অনেকটা কমে গেছে। আশা করছি, শেষদিকে আবার বাড়বে।’

বাংলা প্রকাশের বিক্রয়কর্মী রোবায়েত জামান বলেন, ‘আজ মেলায় পাঠক-দর্শক কম। কাল ছুটির দিনে আশা করছি বাড়বে। মেলার সময় বাড়ায় পাঠক-দর্শক আগমন কমে গেছে। সবাই ভাবছে, সময় আছে, শেষদিকে যাওয়া যাবে।’

অনন্যার বিক্রয়কর্মী ইসাত হোসেন বলেন, ‘লোক সমাগম আগের মতোই বা কিছুটা কম হবে। তবে বই কেনার মতো লোক কম।’

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পরের বইমেলামেলার অন্য আয়োজন

বিকাল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘স্মরণ: মোহাম্মদ আবদুল কাইউম ও বশীর আল হেলাল’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হাসান হাফিজ। আলোচনায় অংশ নেন মো. মুমিত আল রশিদ ও পারভেজ হোসেন। সভাপতিত্ব করেন মোরশেদ শফিউল হাসান।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে হাসান হাফিজ বলেন, ‘মিতভাষী সংযত ও সংহত চরিত্রের অধিকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুল কাইউম ছিলেন নির্মোহ ও নির্লোভ মানুষ। বিশিষ্ট নজরুল গবেষক, অভিধানবিদ, পুরনো বাংলা পাণ্ডুলিপি বিশেষজ্ঞ ছিলেন তিনি। নিরহংকার, সহজ-সরল মানুষটি শিক্ষক হিসেবে এক সম্মানজনক স্থান করে নিয়েছিলেন। অন্যদিকে, বিশিষ্ট গবেষক ও জীবনবাদী কথাশিল্পী বশীর আল হেলাল একাধারে গবেষক, অনুবাদক, কথাশিল্পী, ইতিহাসবিদ, শিল্পসাহিত্যিক। তিনি আজীবন সাহিত্য-সংস্কৃতির সাধনায় ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ। ভাষা-আন্দোলন বিষয়ে তার গবেষণাগ্রন্থ ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস পাঠক গবেষকদের কাছে অতি মূল্যবান আকর গ্রন্থ হিসেবে সমাদৃত।

নতুন বই

এদিন মেলায় নতুন বই এসেছে ১০৮টি। এর মধ্যে গল্প ১৮টি, উপন্যাস ১২টি, প্রবন্ধ ২টি, কবিতা ৬০টি, গবেষণা ২টি, ছড়া একটি, শিশুতোষ বই একটি, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক একটি, ভ্রমণ একটি, রাজনীতি বিষয়ক ২টি, বঙ্গবন্ধু একটি, সায়েন্স ফিকশন ২টি ও অন্যান্য ৫টি।