‘কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভে’ ঢাকা যোগ দেবে, আশা মালদ্বীপের   

ভারত মহাসাগরকেন্দ্রিক নিরাপত্তা গ্রুপিং ‘কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভে’ বাংলাদেশ দ্রুত যোগ দেবে বলে আশা প্রকাশ করেছে মালদ্বীপ। ৯ ও  ১০ মার্চ মালেতে অনুষ্ঠিত ‘কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভের’ জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের বৈঠকে মালদ্বীপের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মারিয়া আহমেদ দিদি এ কথা বলেন।

কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভের সদস্য হচ্ছে—ভারত, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ। এ বছর মরিশাস নতুন সদস্য হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ ও সিসেলস পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র। বৈঠকে সহযোগিতার ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে মেরিটাইম নিরাপত্তা ও সুরক্ষা, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা, মানবপাচার ও আন্তরাষ্ট্রীয় অপরাধ দমন, সাইবার নিরাপত্তা, মানবিক সহায়তা ও ত্রাণকে। ওই ক্ষেত্রগুলোতে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য একটি রোডম্যাপ প্রণয়নের বিষয়ে একমত হয়েছে রাষ্ট্রগুলো।

বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকী। এর আগে গত বছর আগস্টে কনক্লেভের আরেকটি বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার ওয়াকার-উজজামান।

উল্লেখ্য, নিরাপত্তা জোট আসিয়ান রিজিওনাল ফোরামে বাংলাদেশ ২০০৪ থেকে সদস্য হলেও কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভে এ বছর সদস্য হয়নি ঢাকা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক শাহাব আনাম খান বলেন, ‘‘বাংলাদেশের ‘ওয়েট অ্যান্ড সি’ নীতি গ্রহণ করা দরকার।’’

তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির প্রেক্ষাপটে চীনের ভূ-কৌশলগত ও ভূ-রাজনীতিক গুরুত্বকে বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন।’

কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভ কী করবে এবং এই অঞ্চলে কী ধরনের প্রভাব রাখবে, সেটি বোঝার জন্য আরও সময় দরকার আছে, জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটির পরিপূর্ণ স্বরূপ পরিষ্কার হওয়া দরকার।’

কনক্লেভের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে আন্তসম্পর্ক এবং তাদের সঙ্গে চীনের রসায়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার বন্দরগুলো নিয়ন্ত্রণ করে চীন এবং তাদের নৌবাহিনী ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে বেইজিংয়ের  ভালো সম্পর্ক রয়েছে। আবার মালদ্বীপের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা চুক্তি রয়েছে।’

অধ্যাপক শাহাব আনাম খান বলেন, ‘সম্প্রতি বাংলাদেশ ২০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা দিয়েছে শ্রীলঙ্কাকে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মালদ্বীপ সফরের সময়ে ওই দেশকে স্বল্প আকারে সামরিক সহযোগিতা দিয়েছে বাংলাদেশ। এর ফলে ঢাকার যে আকাঙ্ক্ষা, সেটির প্রতিও অন্য দেশগুলো নজর রাখছে।’

কনক্লেভে যোগ দেওয়ার আগে গোটা বিষয়টি পরিষ্কার হওয়া দরকার বলে মনে করেন শাহাব আনাম খান।

উল্লেখ্য, ২০১১ সালে শ্রীলঙ্কার আগ্রহে এই কনক্লেভ গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রথম অবস্থায় মেরিটাইম নিরাপত্তার বিষয়ে সহযোগিতার কথা থাকলেও পরে ২০২০ সালে মেরিটাইম এবং নিরাপত্তা বিষয়ক সহযোগিতার জন্য কাজ করতে রাজি হয় সদস্য রাষ্ট্রগুলো।